অটোরিকশা চুরির অপবাদে মাসুম বিল্লাহ (২৪) নামের এক যুবককে নির্যাতন করে সড়কের পাশে বিদ্যুতের খুঁটিতে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ নির্যাতিত যুবককে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রোববার (২২ জুন) দুপুরে কুমিল্লা নগরীর আশকতলা চৌমুহনী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নির্যাতনের শিকার মাসুম বিল্লাহ কুমিল্লা সদর উপজেলার কালির বাজার ইউনিয়নের যশপুর গ্রামের জাফর আলীর ছেলে। তিনি পেশায় একজন অটোরিকশা চালক। অভিযুক্ত আব্দুল লতিফ (৪৫) একই উপজেলার বাড়োপাড়া এলাকার মৃত মনু মিয়ার ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাসুম বিল্লাহ দৈনিক ৩৫০ টাকা চুক্তিতে বিসিক এলাকার লিটন মিয়ার গ্যারেজ থেকে অটোরিকশা নিয়ে ভাড়ায় চালান। পর্যায়ক্রমে তার ছয় হাজার ৩৫০ টাকা বকেয়া হয়ে যায়। বেশ কয়েকদিন তিনি মালিকের সঙ্গে দেখা না করায় রোববার সকাল ১১টার দিকে অটোরিকশা মালিক আব্দুল লতিফ কুমিল্লা রেলস্টেশন এলাকায় একটি রেস্টহাউজ থেকে মাসুমকে আশকতলা চৌমুহনীতে ধরে নিয়ে আসেন। একপর্যায়ে তাকে রিকশা চুরির আপবাদ দিয়ে অমানসিক নির্যাতন করা হয়। পরে তপ্ত রোদে সড়কের পাশে শিকল দিয়ে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়।
এসময় উপস্থিত জনতা বাধা দিলে তাদের সঙ্গেও ক্ষিপ্ত হন আব্দুল লতিফ। খবর পেলে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ দুপুর ১টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে মাসুম বিল্লাহকে উদ্ধার করে। এসময় অভিযুক্ত আব্দুল লতিফকেও আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
নির্যাতনের শিকার মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘দিনে রিকশা চালিয়ে রাতে রেলস্টেশন এলাকায় একটি বোর্ডিংয়ে থাকি। আব্দুল লতিফ ভাই আমার কাছে কিছু টাকা পেতেন। এ কারণে সকালে বোর্ডিং থেকে আমাকে ধরে নিয়ে আসেন আশকতলায়। একপর্যায়ে চুরির অপবাদ দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। পরে সড়কের পাশে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। পথচারীরা শত চেষ্টা করেও আমাকে ছাড়াতে পারেনি। পরে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে।’
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, দুজনকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এসময় মাসুমের কাছে পাওনা টাকা পরিশোধের আশ্বাস দেন তার পরিবারের লোকজন। পরে উভয় পক্ষ আপস করায় নির্যাতনের দায়ে অটোরিকশা মালিককে ১৫১ ধারায় আদালতে পাঠানো হয়।