কুমিল্লায় অনিয়ন্ত্রিত থ্রি-হুইলার যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের কাছ থেকে ইচ্ছামতো ভাড়া হাতিয়ে নিচ্ছে সিএনজি অটোরিকশা ও ইজিবাইক চালকরা।
কুমিল্লা-সিলেট, কুমিল্লা-লাকসাম, কুমিল্লা-ব্রাহ্মণপাড়া, গৌরীপুর-হোমনা, মেঘনা, বাঞ্ছারামপুর, ইলিয়টগঞ্জ-মুরাদনগর, রামচন্দ্রপুরসহ জেলার সব অভ্যন্তরীণ সড়কে নির্ধারিত ভাড়ার তিনগুণ হারে আদায় করা হচ্ছে।
এদিকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় নিয়ে প্রশাসন মাঝে মধ্যে অভিযান পরিচালনা করলেও তাতে পরোয়া করছেন না চালকরা। এতে যাত্রী সাধারণের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, কুমিল্লার দেবিদ্বার থেকে ময়নামতির ভাড়া ৫০ টাকা; কিন্তু সিএনজি চালকরা ১৫০ টাকা করে আদায় করছেন। এছাড়া কংশনগর, জাফরগঞ্জ এবং কালীকাপুরসহ আশপাশের যেকোনো স্টেশনে নামলে একই হারে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
কোম্পানীগঞ্জ থেকে নবীনগরের ভাড়া ৭০ টাকার স্থলে ২০০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। জেলার মুরাদনগর থেকে ইলিয়টগঞ্জের ভাড়া ৫০ টাকার স্থলে ১৫০ টাকা করে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
হোমনা বাঞ্ছারামপুর থেকে গৌরীপুর সড়কে তিনগুণ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। ওই সড়কের যেকোনো স্থানে নামলে পুরো সড়কের ভাড়া পরিশোধ করতে হচ্ছে।
কুমিল্লার পদুয়ার বাজার থেকে লাকসাম সড়কেও একইভাবে নৈরাজ্য করছে থ্রি-হুইলার চালকরা। তাছাড়া শহরতলীর শাসনগাছা থেকে বুড়িচং ব্রাহ্মণপাড়া সড়কে নির্ধারিত ভাড়ার তিনগুণ আদায় করার অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া এবং দেবিদ্বার উপজেলা প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করে বেশ কিছু থ্রি-হুইলারকে জরিমানা করলেও তাতে পরোয়া করছেন না চালকরা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, উল্লেখিত মূল সড়কেই নয়, প্রত্যন্ত অঞ্চলের সড়কগুলোতে জিম্মি করে যাত্রীদের পকেট কাটা হচ্ছে। বিপদে পড়ে অসহায় যাত্রীরা চাহিদা অনুযায়ী ভাড়া পরিশোধ করতে বাধ্য হচ্ছেন।
দেবিদ্বার থেকে ময়নামতিগামী যাত্রী সাফায়াত হোসেন বলেন, সিএনজি চালক ৫০ টাকার ভাড়া আমার কাছ থেকে ১৫০ টাকা নিয়েছে।
মুরাদনগর থেকে ইলিয়টগঞ্জ গামী যাত্রী ইকবাল হোসেন বলেন, রিজার্ভ ১৫০ টাকার ভাড়া ৫০০ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। পরিবার এবং বাচ্চাদের নিয়ে ঢাকায় ফিরতে হবে। তাই বাধ্য হয়ে এ অতিরিক্ত টাকা পরিশোধ করেছি।
দেবিদ্বার থেকে কোম্পানীগঞ্জগামী যাত্রী আমির হোসেন বলেন, ১০ টাকার ভাড়া ৩০ টাকা নিচ্ছে। সিএনজি চালকরা এখন ডাকাতি করছে।
এদিকে গ্রামগঞ্জের ছোট ছোট সড়কগুলোতে চলাচলকারী অটোরিকশা এবং ইজিবাইকগুলো যাত্রীদের কাছ থেকে তিনগুণ ভাড়া আদায় করছেন বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে।
স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন এবং হাইওয়ে পুলিশের দুর্বল নজরদারির কারণে থ্রি-হুইলার চালকরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে দাবি ভুক্তভোগীদের। যাত্রীদের যাত্রা স্বস্তিদায়ক এবং ভোগান্তিহীন করতে প্রশাসনকে নজরদারি বাড়ানোর আহ্বান সচেতন মহলের।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিরুল কায়সার বলেন, আমরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কারী থ্রি-হুইলার চালকদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। ইতোপূর্বে বেশ কিছু সিএনজি অটোরিকশাকে মোবাইল কোর্টে জরিমানা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের আমাদের কাছে অভিযোগ দিতে হবে। যেখানে অভিযোগ পাব সেখানেই অ্যাকশন হবে।