প্রশাসনের নির্দেশনা অমান্য করে লাকসামে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে বসানো হচ্ছে কুরবানির গরু-ছাগলের হাট। জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও ভিন্ন নামে বাজারের ইজারা নিয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে স্কুল মাঠ। এছাড়া ব্যস্ততম সড়কের পাশ ঘেঁষেও পশুর হাট বসানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুক্রবার ও শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে উপজেলার নরপাটি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও আজগরা হাজী আলতাফ আলী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠসহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে কুরবানির গবাদিপশু বিক্রির জন্য বেধে রাখার খুঁটি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে সপ্তাহের তিন দিন বসবে গরু-ছাগলের হাট। স্কুলের সামনে ও ভবনে উপরেই বড় সাইনবোর্ডে ঝোলানো আছে, ‘বিশাল গরু–ছাগলের হাট'।
নরপাটি বহুমুখী স্কুলের সামনে কথা হয় কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে। তারা বলেন, বৃষ্টি মধ্যে আমাদের স্কুল মাঠে গরু-ছাগলের হাট করার জন্য খুঁটি বসানো হচ্ছে। শুক্রবার ও শনিবার ইজারাদার ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা এসে মাঠ পরিদর্শন করে গেছেন। আমরা এখন কোথায় খেলাধুলা করবো। কুরবানির বাজারের পর ঈদের ছুটি শেষ হয়ে গেল মাঠ থেকে দুর্গন্ধ সরে না। পোকামাকড়, মশা–মাছি বেড়ে যায়। এগুলো পরিষ্কার করার চেষ্টা করা হলেও কোনো লাভ হয় না।'
নরপাটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। আজগরা ইউনিয়নের বিএনপির নেতা আবদুর ছালাম বলেন, বাজারে মাঠ না থাকার কারণে ইজারাদার আজগরা হাজী আলতাফ আলী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে পশুর হাট বসাচ্ছেন। শুনেছি তিনি উপজেলা প্রশাসনে সঙ্গে কথা বলে এমনটি করছেন। মঙ্গলবার ও শুক্রবার মাঠটিতে কুরবানি পশুর হাট বসবে।
এদিকে, উত্তরদা হাই স্কুল, কামড্ডা শহিদ আবুল খায়ের উচ্চ বিদ্যালয়, রাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়, শ্রীয়াং প্রাথমিক বিদ্যালয়, আজাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,আতাকরা স্কুল অ্যান্ড কলেজ,হারাখাল রাবেয়া আলী ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও কৃষ্ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে কুরবানির পশুর হাট বসানোর সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
লাকসাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার হামিদ বলেন, ‘আমরা কোনো স্কুল–কলেজের মাঠে পশুর হাট ইজারা দেয়নি। হয়তো ইজারাদাররা হাটের জন্য অন্যস্থান দেখিয়ে স্কুলের মাঠ ব্যবহার করছে। আমি বিষয়টি জেনে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে লাকসাম ও মনোহরগঞ্জের ১৯ ইউনিয়নে ৩৬টি হাট বসবে। এর মধ্যে লাকসামে ১৯টি ও মনোহরগঞ্জে ১৭টি কুরবানি পশুর হাটের অনুমোদন দেয় সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন কর্তৃপক্ষ।