অভিনেত্রী ও নির্মাতা মেহের আফরোজ শাওন, সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ, পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) নাজমুলসহ ১২ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্লাহ নিষেধাজ্ঞা জারির এ নির্দেশ দেন। শাওনের সৎমা নিশি ইসলামের করা মামলায় এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী পারভেজ সুমন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আজ মামলার ধার্য তারিখ ছিল। কিন্তু শাওনসহ অন্য ১০ জন আদালতে হাজির না হওয়ায় তাঁদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী। শুনানি শেষে আদালত ওই আবেদন মঞ্জুর করেন।
অন্য যাঁদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তাঁরা হলেন মেহের আফরোজ শাওনের বাবা ইঞ্জিনিয়ার মো. আলী, শাওনের বোন মাহিন আফরোজ শিঞ্জন ও সেঁজুতি, শিঞ্জনের স্বামী সাব্বির, সুব্রত দাস, মাইনুল হোসেন, মো. আলীর ভাগনে মোখলেছুর রহমান মিল্টন, পুলিশ পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া ও উপপুলিশ পরিদর্শক শাহ আলম।
সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া ও শাহ আলম এ মামলায় জামিনে আছেন এবং তাঁরা আদালতে হাজির ছিলেন। শাওনসহ অন্যদের বিরুদ্ধে গত ২২ এপ্রিল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
জানা যায়, গত ১৩ মার্চ শাওনের সৎমা নিশি ইসলাম হত্যাচেষ্টা ও মারধরের অভিযোগে ১২ জনকে আসামি করে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের শুরুর দিকে শাওনের বাবা ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আলী একটি ম্যারেজ মিডিয়ায় বিয়ের জন্য পাত্রী চাই বিজ্ঞাপন দেন। সে বিজ্ঞাপন থেকে নিশির সঙ্গে পরিচয় হয় ও ২১ ফেব্রুয়ারি বিয়ে হয়।
এ ঘটনা জানার পর বাদীর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালান শাওন। ২০২৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বাদী নিশি ইসলামের বাড়িতে এসে শাওন, তাঁর ভাই-বোন ও অন্যরা বিয়ের ঘটনা গোপন রাখতে বলেন এবং কাউকে কিছু না জানিয়ে তালাক দিতে চাপ সৃষ্টি করেন। বাদী তা করেননি। পরে একই বছরের ৪ মার্চ বাদিনীকে কৌশলে ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আলী গুলশানের বাড়িতে খবর দিয়ে নিয়ে যান। সেখানে গেলে শাওন ও অন্য আসামিরা তালাকনামায় স্বাক্ষর করতে চাপ সৃষ্টি করেন। বাদী রাজি না হওয়ায় শাওন ভোঁতা অস্ত্র দিয়ে বাদীর শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করেন। নাকে-মুখেও প্রচণ্ড আঘাত করেন। রক্তাক্ত হন বাদী। বাদী মামলায় অভিযোগ করেন, খুনের উদ্দেশ্যে তাঁকে এই আঘাত করা হয়।
বাদী মামলার আরজিতে আরও বলেন, পরে বাদীকে খবর দিয়ে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁকে তালাকনামায় স্বাক্ষর করতে চাপ সৃষ্টি করা হয় এবং রাজি না হলে তাঁকে পুলিশের কর্মকর্তারা মারধর করেন। আবার মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়ে তাঁকে কারাগারের মাধ্যমে জেলে পাঠানো হয়। ছয় মাস জেল খাটতে হয় তাঁকে।a