চট্টগ্রাম নগরীতে দুটি হত্যা মামলায় আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী মো. সাজ্জাদ হোসেন প্রকাশ ছোট সাজ্জাদকে পৃথক ১৪ দিনের রিমান্ড শেষে আরও ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
এর আগে ঈদের ছুটির পর রোববার (৬ এপ্রিল) ছোট সাজ্জাদকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মো. মফিজ উদ্দীন বলেন, সকালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলাউদ্দিনের আদালতে তাহসিন হত্যা মামলায় পুনরায় সাজ্জাদ হোসেন প্রকাশ ছোট সাজ্জাদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আদালত শুনানি শেষে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ১৫ মার্চ রাতে ঢাকার বসুন্ধরা সিটি থেকে গ্রেপ্তারের পর ১৬ মার্চ আদালতে হাজির করলে তাহসিন ও আনিছ হত্যা মামলায় তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। তবে রিমান্ডেও সে অপরাধের দায় স্বীকার করেনি। পুলিশ জানায়, সাজ্জাদ অত্যন্ত চতুর এবং পেশাদার সন্ত্রাসী।
সাজ্জাদের বিরুদ্ধে রয়েছে ট্রিপল মার্ডারসহ অন্তত ১৬টি মামলায় ওয়ারেন্ট। তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলাকালেই ২৯ মার্চ রাতে চট্টগ্রাম নগরের সিরাজদৌল্লা রোডে সিনেমাটিক স্টাইলে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে, যার পেছনে সাজ্জাদ ও তার অনুসারীদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় সাজ্জাদের স্ত্রী শারমীন আক্তার তামান্নাও হুকুমের আসামি। তিনি আগে থেকেই ফেসবুক লাইভে স্বামীকে ‘বান্ডিলে বান্ডিলে টাকা ঢেলে’ মুক্ত করার হুমকি দিয়েছিলেন। পুলিশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিতর্কিত মন্তব্য করায় তিনিও এখন তদন্তের আওতায়।
নগর পুলিশের উপকমিশনার আমিরুল ইসলাম জানান, সাজ্জাদের অপরাধ নেটওয়ার্ক নির্মূলের জন্য কাজ চলছে। রিমান্ডে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে, তবে তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত প্রকাশ করা যাচ্ছে না।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর বিকালে চান্দগাঁও থানার অদুরপাড়া এলাকায় দোকানে বসে চা পানের সময় তাহসিন নামে এক যুবককে গুলি করে হত্যা করে কালো রংয়ের একটি গাড়িতে করে আসা লোকজন। ওই ঘটনায় চান্দগাঁও থানায় তাহসিনের বাবার করা মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছিল পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদকে।
এছাড়া চাঁদার জন্য বিভিন্ন ভবনে প্রকাশ্যে অস্ত্রবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে সাজ্জাদ জড়িত বলে পুলিশের ভাষ্য। আত্মগোপনে থাকা সাজ্জাদ গত ২৮ জানুয়ারি রাতে ফেসবুক লাইভে এসে বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি আরিফ হোসেনকে পেটানোর হুমকি দেন। এরপর ৩০ জানুয়ারি সাজ্জাদের সন্ধান চেয়ে পুরস্কার ঘোষণা করে সিএমপি।
এদিকে নগরের বাকলিয়া এক্সেস রোড চন্দনপুরা অংশে প্রাইভেটকারে গুলি করে জোড়া খুনের ঘটনায় নগরের বাকলিয়া থানার মামলায় ছোট সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) মো. মফিজ উদ্দীন।