রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকার একটি বাসা থেকে গতকাল সন্ধ্যায় এক নারী সংবাদকর্মীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি অনলাইন পোর্টাল ‘ঢাকা স্ট্রিম’–এর গ্রাফিক ডিজাইনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা করেছে পরিবার।
ওই নারী গণমাধ্যমকর্মীর গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদাহ আদর্শপাড়ায়। পরিবারসহ সোবহানবাগের নাভানা টাওয়ারে ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি।
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের ইবনে মিজান সমকালকে বলেন, ঘটনাটি জানার পর পুলিশ স্থানীয় একটি হাসপাতালে গিয়ে গণমাধ্যমকর্মীর মরদেহ পায়। তার পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে জানিয়েছে, ঘরের দরজা ভেঙে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এরপর ময়নাতদন্তের পর লাশ পরিবারের কাছে দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, মৃতের ভাই বাদী হয়ে অপমৃত্যুর মামলা করেছে। পুলিশ তদন্ত করছে। ময়নাতদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে কীভাবে মারা গেছেন। পরিবারের কেউ এখনো কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করেনি।
সম্প্রতি ওই নারী গণমাধ্যমকর্মী ঢাকা স্ট্রিমের বাংলা কনটেন্ট এডিটর আলতাফ শাহনেওয়াজের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগকারীদের একজন ছিলেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া অনেকের ভাষ্য।
বিষয়টি জানতে আলতাফ শাহনেওয়াজের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ফোন রিসিভ করেন তার স্ত্রী। তিনি সমকালকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আলতাফ কোনো মন্তব্য করবে না।’
এদিকে নারী সংবাদকর্মীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। তাতে বলা হয়েছে, এমন সব ঘটনায় কর্মক্ষেত্রে নারীর নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ‘আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোট’ও। এই বিবৃতিদাতাদের মধ্যে আছেন– অধিকারকর্মী সুলতানা কামাল, শাহীন আনাম, শীপা হাফিজা, রেখা সাহা প্রমুখ।
আজ রোববার বিকেলে ঢাকা স্ট্রিমের মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের ব্যবস্থাপক পিএম সজল আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, আলতাফ শাহনেওয়াজের বিরুদ্ধে ১৩ জুলাই অভিযোগ জমা পড়ে। এরপর তাকে বার্তাকক্ষ থেকে প্রত্যাহার করা হয়। তদন্তে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, তদন্তে তার কিছু অসৌজন্যমূলক আচরণের সত্যতা পাওয়া যায়। এতে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়।
নিহত নারীকর্মীর মৃত্যুর সঙ্গে আলতাফ শাহনেওয়াজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কোনো সম্পর্ক নেই। তিন মাস আগের অভিযোগকে কেন্দ্র করে বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।