এদেশে একজন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকেও ঢাকার গুলশান-বনানীতে থাকতে হয়। ঢাকা কেন্দ্রীক অতি নগরায়নের কারণে প্রতিবছর জাতীয় উৎপাদন বা জিডিপির ক্ষতি হচ্ছে ৬ থেকে ১০ শতাংশ।
গবেষকরা বলছেন, যানজট, উচ্চ তাপমাত্রাসহ নানা কারণে রাজধানীর নাগরিকদের উৎপাদনশীলতা কমছে। ঢাকার বদলে কোনো প্রান্তিক শহরে একই পরিমাণ বিনিয়োগে বেশি রিটার্ন পাওয়া যাবে। সেই সঙ্গে ঢাকাকে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বনানীতে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট আয়োজিত এক সেমিনারে এসব তথ্য জনানো হয়।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) এবং পিআরআই-এর যৌথ পরিচালনায় সেমিনারে ‘আরবানাইজেশন অ্যান্ড বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়।
পিআরআই নির্বাহী পরিচালক ড. খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসন জিল্লুর রহমান। গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন পিআরআই-এর পরিচালক ড. আহমেদ আহসান।
সেমিনারে জানানো হয়, জেলা শহরগুলোর উন্নয়ন ছাড়া জিডিপির কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি সম্ভব নয়।
এতে বলা হয়, যাদুর শহর ঢাকা। প্রায় দুই কোটি মানুষের বসবাস এ রাজধানী শহরে। এর ওপর প্রতিদিন প্রায় দেড় কোটি মানুষের নানা কাজে আসা যাওয়া এ শহরে। কোটি কোটি মানুষের ভারে ক্লান্ত ঢাকায় যানজটে, দুষণে কর্মক্ষমতা কমছে নাগরিকদের। অর্থনীতির হিসাবে অতি ঢাকামুখীতায় জিডিপির ক্ষতি বছরে ৬ থেকে ১০ শতাংশ।
ঢাকা, চট্টগ্রাম ছাড়া দেশের অন্য শহরগুলোতে নাগরিক সুবিধা বলতে কিছু নেই। রাজনৈতিক দলগুলোর সুনজর ছাড়া দেশের প্রান্তিক এলাকাগুলোর উন্নয়ন সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে শুধু ঢাকার অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ না করে দেশের অন্যান্য শহরগুলোতেও বিনিয়োগ করতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, রাজনৈতিক লক্ষ্যের অভাবে এদেশে ঢাকার বিকল্প কোনো শহর গড়ে ওঠেনি। এদেশে একজন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের পরিবারকেও ঢাকার গুলশান-বনানীতে থাকতে হয়। বাস্তবতা হয়তো এরকমই।
তিনি আরও বলেন, নীতি কাঠামোর দুর্বলতার কারণেও বাধ্য হয়ে সবাইকে ঢাকা মুখী হতে হয়। এজন্য ঢাকাকে বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদকে শক্তিশালী করতে হবে।