নবীগঞ্জের আনমনু ও তিমিরপুর গ্রামে তিন দিনব্যাপী চলা দাঙ্গার ঘটনায় দুইজন নিহত হওয়ার পর রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) শালিস বৈঠকের মাধ্যমে সংঘর্ষের অবসান ঘটানো হয়েছে। শালিস বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, উভয় পক্ষকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। নিহত দুই পরিবারের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে মোট ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ, যেখানে প্রত্যেক পরিবার পাচ্ছে ১০ লাখ টাকা করে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৩০ লাখ টাকা।
নবীগঞ্জ সরকারি মডেল জে কে হাইস্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত শালিস বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সুজাত মিয়া। এতে উপস্থিত ছিলেন সিলেট মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারী ও হবিগঞ্জ-১ আসনের দলীয় মনোনিত এমপি প্রার্থী মোঃ শাহাজাহান আলী, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সফিকুর রহমান ফারছু, নবীগঞ্জ উপজেলা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের শালিস বিচারকবৃন্দ।
বৈঠকে দুই পক্ষের মামলা প্রত্যাহারের শর্তে জরিমানা আরোপ করা হয় এবং ভবিষ্যতে এরকম সংঘর্ষে জড়ালে ২০ লাখ টাকা জরিমানা করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। এছাড়া নবীগঞ্জে শান্তি বজায় রাখার লক্ষ্যে আশপাশের গ্রামের কমপক্ষে পাঁচ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির সমন্বয়ে একটি শান্তি কমিটি গঠন করা হবে, যারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করবে।
সাবেক এমপি শেখ সুজাত মিয়া বলেন, “নবীগঞ্জের সর্বসাধারণ ও প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা এ সংকট আপোষে মীমাংসা করতে পেরেছি। আশা করছি, ভবিষ্যতে নবীগঞ্জ আবার শান্তির শহর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে এবং কারো অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘর্ষের চেষ্টা প্রতিহত করা হবে।”
গত কয়েকদিনে তুচ্ছ ঘটনায় শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে ২ জন নিহত ও অসংখ্য আহত হয়েছেন। হাসপাতাল, মাছ বাজারসহ বিভিন্ন দোকানপাট ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছিল। প্রশাসনের সহযোগিতায় গঠিত শালিস বোর্ড দীর্ঘ আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে এই রায় দেয়।
শালিস শেষে মোনাজাতের মাধ্যমে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয় এবং উভয় পক্ষ একে অপরের সঙ্গে বুঝে শালিসের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে।