সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য পূর্বের নির্ধারিত জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপন করার লক্ষ্যে এবং দ্রুত তার পদক্ষেপ ও বাস্তবায়ন করতে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করেছেন বৃহত্তর সুনামগঞ্জবাসী।
সোমবার (০৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২.০০ ঘটিকায় শান্তিগঞ্জে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. মো. নিজাম উদ্দিন এর হাতে এ স্বারকলিপি তুলে দেন বৃহত্তর সুনামগঞ্জবাসী।
স্বারকলিপি প্রদানকালে বক্তারা বলেন, ২০২০ সালে হাওরবাসী এবং প্রান্তিক অবহেলিত সুনামগঞ্জ জেলায় সারা দেশের ন্যায় উচ্চশিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে জাতীয় ভাবে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠা লাভ করার পরে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে নিয়মিত ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি এবং একাডেমিক (ক্লাস ও পরীক্ষা সমূহ) কার্যক্রম ধারাবাহিক ভাবে চালু আছে।
কিন্তু আমরা দেখতে পাই একটি সুবিধাবাদী মহল সুবিপ্রবিকে নিজেদের কুক্ষিগত করে রাখতে সদা তৎপর। কতিপয় ব্যক্তিবর্গরা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য সুবিপ্রবির নির্ধারিত স্থান (প্রশাসনিক ভাবে স্বীকৃত) নিয়ে নানা প্রকার অপপ্রচারে লিপ্ত। এই বৃহৎ জাতীয় প্রতিষ্ঠানকে আঞ্চলিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার একটি অপচেষ্টা নানা মহলে চলমান আছে যা পর্যবেক্ষন করে বৃহত্তর সুনামগঞ্জ জেলার সচেতন আমরা খুবই উদ্বিগ্ন।
বক্তরা আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের লক্ষ্যে সুনামগঞ্জ শহর হতে ১২ কি.মি. দক্ষিণে সদর উপজেলা ও শান্তিগঞ্জ উপজেলার মধ্যবর্তী জায়গা এবং বৃহত্তর জেলার অন্যান্য উপজেলার সংযোগ স্থলে স্থান নির্ধারন করে এর উপর সরকারি অর্থ খরচ করে সম্ভাব্যতা নীরিক্ষা সম্পন্ন করে একটি মাস্টারপ্লান এর কাজ শেষ হয়েছে। উল্লেখ্য, নির্ধারিত জায়গায় বেশিরভাগই খাস জমি এবং স্থাপনা নির্মানের জন্য কোন বসতি উচ্ছেদের প্রয়োজন নেই।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় বিল মহান জাতীয় সংসদে পাশ হওয়ার প্রায় ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মানের কোন দৃশ্যমান উদ্যোগ আমাদের চোখে না পড়ায় বৃহত্তর সুনামগঞ্জবাসী হিসেবে আমরা হতাশ এবং মর্মাহত।
আমরা মনে করি, নির্ধারিত স্থানে দ্রুত সুবিপ্রবি ক্যাম্পাস স্থাপন করা হলে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। সুবিপ্রবির জন্য যে জায়গা নির্ধারন করা হয়েছে সেটি যথেষ্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এবং প্রতিবেশগত বিবেচনায় শিক্ষা ও গবেষণার জন্য উপযোগী মানসম্মত স্থান বলেই বিবেচিত। নির্ধারিত জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ফলে বৃহত্তর জেলার সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত হবে। এ ছাড়া অবহেলিত বৃহত্তর সুনামগঞ্জ জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা বাস্তবায়িত হবে।
স্মারকলিপি গ্রহণ করে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (সুবিপ্রবি) উপাচার্য(ভিসি) অধ্যাপক ড. মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, সুবিপ্রবি'র নির্ধারিত জায়গায় স্থায়ী ক্যাম্পাস দ্রুত স্থাপনের লক্ষ্যে বৃহত্তর সুনামগঞ্জবাসীর দাবি ও এবিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সু্বিপ্রবি'র প্রক্টর ড. সেখ আব্দুল লতিফ, শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য মো. ফারুক আহমেদ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মো. ফরিদুর রহমান ফরিদ, শালিস ব্যক্তিত্ব মো. মুনসুর আলী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মো. আব্দুল কাদির জিলানী, বিএনপি নেতা শফিকুল ইসলাম, শাহিন মিয়া, ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি মো. আশরাফ উদ্দিন, উপজেলা শ্রমিককল্যাণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মামুন আহমদ, উপজেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি মো. আফসার উদ্দিন, দলিল লিখক নির্মল কুমার দাস, আবিদ উদ্দিন প্রমূখ।
উল্লেখ্য, স্বারকলিপির অনুলিপি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান ও সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরেও পাঠানো হয়েছে।