সিলেটের সীমান্তবর্তী গোয়াইনঘাট থানার ওসি (তদন্ত) মো. কবির হোসেনের বিরুদ্ধে নিজ থানার কর্মকর্তাদের পোস্টিং বাণিজ্যের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। সীমান্তবর্তী এলাকার চোরাচালান, বিশেষ করে জাফলং, পূর্ব জাফলং, মধ্য জাফলং, পশ্চিম জাফলং এবং বিছনাকান্দি সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় অবৈধ পণ্যের বেপরোয়া পাচারের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তিনি এই বাণিজ্য চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ। এছাড়াও, জাফলংয়ের পাথরকাণ্ডেও তার নাম উঠে এসেছে। বর্তমানে গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার মো. তোফায়েল আহমদের বদলির গুঞ্জনকে পুঁজি করে কবির হোসেন বিভিন্ন বিটে কর্মরত অফিসারদের ঘুষের মাধ্যমে পোস্টিং দিচ্ছেন এবং তিনি পরবর্তী ওসি হিসেবে এগিয়ে আছেন বলে দাবি করছেন।
জানা গেছে, গত ২৪ আগস্ট গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছুটিতে গেলে ওসি (তদন্ত) কবির হোসেন ভারপ্রাপ্ত ওসির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এই সুযোগে তিনি কৌশলে সীমান্ত এলাকার চারটি বিট, যা মূলত চোরাচালানের 'হট স্পট' হিসেবে পরিচিত, সেখানকার বিট অফিসার ও কনস্টেবলদের পরিবর্তন করে নিজের মনোনীতদের দায়িত্ব দেন। অভিযোগ উঠেছে, এর বিনিময়ে তিনি বিট অফিসারদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা এবং এএসআইদের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা করে ঘুষ নিয়েছেন।
সূত্র আরও জানায়, ওসি (তদন্ত) কবির হোসেন এএসআই এবং কনস্টেবলদের কাছে বলে বেড়াচ্ছেন যে গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিগগিরই বদলি হচ্ছেন এবং নতুন ওসি হিসেবে তিনি নিজেই এগিয়ে আছেন। তিনি লবিং ও তদবির করছেন এবং ওসি হলে 'বর্ডার ওপেন' করে দেবেন, যার ফলে সকল এএসআই ও কনস্টেবল তাদের টাকা উসুল করে আরও লাভবান হবেন।
সর্বশেষ, ওসি (তদন্ত) কবির হোসেন বিছানাকান্দি ও পূর্ব জাফলং বিটের দুই কনস্টেবলকে একাধিকবার অদলবদল করেছেন এবং যিনি সর্বোচ্চ টাকা ঘুষ দিয়েছেন, তাকেই বিছানাকান্দি বিটে দায়িত্ব দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট থানার ওসি (তদন্ত) কবির হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ‘এগুলো কোথা থেকে শুনেন’ বলে ফোন কেটে দেন।
গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার তোফায়েল আহমদের সরকারি নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তার মুঠোফোনে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পাথর লুটকাণ্ডে আলোচিত কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট থানায় কর্মরত ১১ জন উপপরিদর্শক (এসআই) ও সহকারী উপপরিদর্শককে (এএসআই) বদলি করা হয়। এরমধ্যে কোম্পানীগঞ্জ থানার তিনজন এসআই ও একজন এএসআই এবং গোয়াইনঘাট থানার চারজন এসআই ও তিনজন এএসআই রয়েছেন।