ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ডামাডোলে সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসনে রাজনৈতিক উত্তাপ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা ইতোমধ্যেই মাঠপর্যায়ে নিজেদের অবস্থান সুসংহত করতে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। বিশেষ করে বিএনপি এবং বিভিন্ন ইসলামী দলগুলোর মধ্যে প্রার্থী তালিকা ও সম্ভাব্য প্রতীক নিয়ে কর্মী-সমর্থকদের মাঝে চলছে তীব্র আলোচনা ও বিশ্লেষণ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও নেতাকর্মীরা মনে করছেন, এই আসনটি সিলেটের স্থানীয় রাজনীতিতে সর্বদা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। তাই, দলীয় প্রার্থীর হাতে 'ধানের শীষ' প্রতীক নিশ্চিত করার দাবি বিএনপির তৃণমূল থেকে শুরু করে উচ্চপর্যায় পর্যন্ত জোরালো হচ্ছে।
স্থানীয় বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, এই আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের দীর্ঘ একটি তালিকা রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন সিলেট জেলা বিএনপির সহসভাপতি মামুনুর রশীদ (চাকসু মামুন), জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, প্রয়াত প্রভাবশালী নেতা আবুল হারিছ চৌধুরীর কন্যা সামিরা তানজিন চৌধুরী, কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আশিক উদ্দিন চৌধুরী, সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুল হক চৌধুরী (ভিপি মাহবুব), জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ তাপাদার, সংযুক্ত আরব আমিরাত বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসেন এবং জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের প্রচার সম্পাদক লুৎফা খানম স্বপ্না।
তবে একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র মতে, প্রয়াত আবুল হারিছ চৌধুরীর কন্যা, শিক্ষিত, সৎ ও তরুণ প্রার্থী ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন চৌধুরীর দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশ উজ্জ্বল।
অন্যদিকে, ইসলামী দলগুলোর প্রার্থীর তালিকাও বেশ শক্তিশালী এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মাওলানা আনওয়ার হোসেন খান, খেলাফত মজলিসের মুফতী আবুল হাসান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুফতী রেজাউল করিম আবরার, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের রেজাউল করিম জালালী এবং ইসলামি ঐক্যজোটের মুফতী ফয়জুল হক জালালাবাদী।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সিলেট-৫ আসনে প্রধান নির্বাচনী লড়াই মূলত বিএনপি এবং ইসলামী দলগুলোর মধ্যে সংঘটিত হবে। নির্বাচনী প্রতীক, দলীয় সাংগঠনিক শক্তি এবং স্থানীয় জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে প্রার্থীরা তাদের সম্ভাব্য অবস্থান নিয়ে নিবিড় সমীক্ষা চালাচ্ছেন। তাদের ধারণা, ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসবে, পরিস্থিতি ততই উত্তপ্ত এবং তীব্র প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠবে।
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক উত্তাপ এবং সম্ভাব্য প্রার্থীদের নামের আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, এই আসনটি কেন্দ্রীয় রাজনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলার ক্ষমতা রাখে। ফলশ্রুতিতে, আসন্ন নির্বাচনে সিলেট-৫ আসনটি একটি নজরকাড়া লড়াইয়ের মঞ্চে পরিণত হওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।