বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
সিলেট বিভাগ

মানববন্ধন, প্রতিবাদ সভাবেশ ও আল্টিমেটাম, মহাসড়ক ও ইউএনও অফিস ঘেরাও এর হুমকি

নবীগঞ্জে রাস্তা সংস্কারের দাবিতে ফুঁসে উঠেছে অন্তত ৫০টি গ্রামের লোকজন। রাস্তাটি সংস্কার না করায় দীর্ঘ ১২ বছর ধরে চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন ৫টি উপজেলার কয়েক লক্ষ জন সাধারন।

অবশেষে রাস্তা সংস্কারের দাবিতে শুক্রবার ১০ সহস্রাধিক ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে এক বিশাল মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।  উক্ত সমাবেশে আল্টিমেটাম দেয়া হয় শিগরিই রাস্তাটি মেরামত না করা হলে ঢাকা সিলেট মহাসড়ক অবরোধ ও ইউএনও এলজিইডি অফিস ঘেরাও করবেন এলাকাবাসী।

জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার বড় ভাকৈর ইউনিয়নে কাজীর বাজার থেকে বানিয়াচং উপজেলার মার্কুলি পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন আশপাশের ৫০টি গ্রামের অন্তত ২ লাখ মানুষ চলাচল করেন । সংস্কারের অভাবে ফুঁসে উঠেছেন ৫০টি গ্রামের লোকজন।  রাস্তাটির অবস্থা বেহাল থাকায় চলাচলে মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে স্থানীয়দের।

বিশেষ করে স্কুলগামী কোমলমতি শিক্ষার্থী ও বয়ষ্ক ব্যক্তিরা এ রাস্তা চলাচলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। সময় মতো স্কুল কিংবা অফিসে না যেতে পারার অভিযোগও করছেন কেউ কেউ। রোগীবাহী এ্যাম্বুলেন্স বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের নিয়ে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েন স্থানীয়রা। রাস্তা খারাপ থাকায় অনেক সময় এ্যাম্বুলেন্স চালকরাও এ রাস্তায় রোগী বহন করতে রাজি হয় না বলেও অভিযোগ করেন কেউ কেউ। দীর্ঘ ১ যুগেরও বেশি সময় ধরে হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের ৫ উপজেলা গুলো নবীগঞ্জ, বানিয়াচং, দিরাই, শাল্লা ও আজমিরীগঞ্জ এর অন্তত ৫০ গ্রামের মানুষ রাস্তাটি দিয়ে যাতায়াতে এমন অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। রাস্তা সংস্কারের ব্যাপারে তারা জেলা প্রশাসকসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে তদবীর করলেও কোন লাভ হয়নি। এ কারণে ২৬ কিলোমিটার রাস্তাটি ব্যবহারকারীদের যেন ক্ষোভের শেষ নেই। এলাকার মানুষের মাঝে বর্তমানে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এরই বহিঃপ্রকাশ গত শুক্রবার বেলা ৩ টায় বড় ভাকৈর ইউনিয়নের চর সোনাপুর গ্রামে ছাত্র-জনতা উদ্যোগে বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ অংশ নেন অন্তত ১০ হাজার মানুষ। এ সময় তাদের হাতে প্রতিবাদ স্বরূপ বিভিন্ন প্লে­কার্ড দেখা যায়। রিংকু কুমার দাশ ও আলমগীর হোসেন আরিফের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিত্ব, শিক্ষার্থীসহ এলাকার গণ্যমান ব্যক্তিবর্গ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন- কাজীর বাজার টু মার্কুলি ২৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য রাস্তাটি পাড়ি দিতে সর্বোচ্চ ১ ঘন্টা সময় লাগার কথা। অথচ আমাদের সময় লাগে ৩ ঘন্টা। পুরো রাস্তায় অসংখ্য গর্ত সৃষ্টি হওয়ার কারণে দিন দিন এই রাস্তায় যাতায়াত করা আমাদের কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে পড়েছে । গত ১ যুগ ধরে আশপাশের প্রায় ৫০টি গ্রামের মানুষ ওই রাস্তায় চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। রাস্তাটি সংস্কারের জন্য ইউএনও, জেলা প্রশাসক, সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের কাছে বহুবার আবেদন করা হয়েছে। কি আশ্বাসের বাহিরে আমরা সমাধান পাইনি। অনেকটা বাধ্য হয়েই ভুক্তভোগী ৫০ গ্রামের মানুষ রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার বা পুনঃনির্মাণের দাবিতে রাস্তায় নেমেছি। দ্রুত আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অবরোধ, উপজেলা ইউএনও অফিস ঘেরাওসহ নানা প্রতিবাদ কর্মসূচিরও হুমকি দেন বক্তারা। রাস্তাটি সংস্কারে দলমত নির্বিশেষে সবাই এক সাথে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

এবিষয়ে সাবেক নবীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান চৌধুরী শেফু বলেন, আমি উক্ত মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলাম। এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগে পড়ে ক্ষুদ্ধ হয়েছেন। তাদের এলাকার ঐ সড়কটি  ১২ বছর ধরে মেরামত হচ্ছে না। জন দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে সড়ক মেরামত করা খুবই জরুরি। আর না হয় মহাসড়ক অবরোধসহ নানা রকম কর্মসুচীর আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে।

এব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী সাব্বির আহমদ জানান, আমরা সড়কটি নিয়ে কাজ করছি, কোন আল্টিমেটাম দিয়ে লাভ নেই।

নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রুহুল আমীন বলেন, আমরা শোনেছি রাস্তাটি নিয়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা হয়েছে। তারা এখনও আমাদেরকে কোন লিখিত স্বারক লিপি দেননি। আমরা খবর পেয়ে অলরেডি সড়কটি সংস্কারের জন্য উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সাথে যোগযোগ করেছি। একটু বড় প্রকল্প কয়েক কোটি টাকার কাজ একটু বিলম্ভ হতে পারে অপেক্ষা করতে হবে।

এই সম্পর্কিত আরো