সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় একটি বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। বোরকা পরিহিত ৫-৭ সদস্যের ডাকাত দল বাড়ির মালিককে হাত-পা ও মুখ বেধে ঘরে থাকা নগদ সাত লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ১৫ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) রাত ১টার দিকে সদর উপজেলার কুরবান নগর ইউনিয়নের আলমপুর (নুরপুর) গ্রামের শহিদুল ইসলামের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে সুনামগঞ্জ সদর থানা পুলিশ সদস্যরা। পরে আজ সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন, সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমেদ, সুনামগঞ্জ সদর থানার ওসি মো. আবুল কালাম এবং ওসি তদন্তসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা। এ সময় ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের আশ্বাস প্রদান করেন পুলিশ সুপারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
ভুক্তভোগী শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিনের মতো রাতের খাবার খেয়ে আমি ঘুমিয়ে পড়ি। রাত ১টার দিকে স্টিলের দরোজা ভেঙ্গে বোরকা পরিহিত ৫-৭ সদস্যের ডাকাত দল ঘরে প্রবেশ করে দেশীয় অস্ত্রের মুখে আমার হাত-পা ও মুখ বেধে ফেলে। পরে ঘরে থাকা নগদ সাত লাখ টাকা ও ৫ ভরি স্বর্ণালংকার সহ প্রায় ১৫ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায় ডাকাতরা।
জানা গেছে, গ্রামের মৃত মোশাররফ আলীর আরও ৫ ছেলে প্রবাসে থাকেন। ঘটনার সময় শহিদুল ইসলাম বাড়িতে একাই ছিলেন। এ সময় পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বাড়িতে ছিলেননা। পাশের ঘরে জনৈক শিক্ষক ঘুমিয়ে ছিলেন। ডাকাতরা মালামাল লুট করে চলে যাওয়ার পর শহিদুল ইসলাম হাত-পা ও মুখ বাধা অবস্থায় হামাগুড়ি দিয়ে এসে দরোজায় পা দিয়ে ধাক্কা দিয়ে শব্দ করতে থাকেন। পরে পাশের ঘর থেকে শব্দ পেয়ে ছুটে আসেন জনৈক শিক্ষক। পরে ঘটনার জানাজানি হলে গ্রামবাসী এসে ঘটনাস্থলে জড়ো হন।
ভুক্তভোগীর এক চাচা জানান, শহিদুল ইসলাম গ্রামের জামে মসজিদের ক্যাশিয়ার। বিলের মাছ বিক্রির টাকাসহ গ্রামের মানুষজন তার কাছে টাকা পয়সা জমা রাখতেন। এ ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তারা খুবই জানাশোনা লোক। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করা হলে ডাকাতির মূল হোতারা বেরিয়ে আসবে। এ জন্য প্রশাসনকে গ্রামবাসীর সহযোগিতা করা উচিৎ।
ডাকাতির ঘটনায় হতবাক হয়েছেন গ্রামবাসীসহ অন্যান্য এলাকার বাসিন্দারাও। ঘনবসতিপূর্ণ গ্রামের মধ্যখানে ডাকাতির ঘটনা সংঘটিত করার দুঃসাহস কিভাবে হয়, বিষয়টি কেউ চিন্তাও করতে পারছেন না। এ ঘটনা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া সরগরম হয়ে ওঠেছে। সুধিজনসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষজন বলছেন, যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদেরকে দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। তা না হলে সমাজে এমন ঘটনা আরও বৃদ্ধি পাবে। তাই সমাজে ডাকাতি, চুরিসহ সব ধরনের অপরাধ নির্মূল করতে এলাকাবাসীর ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার বিকল্প নেই।
সুনামগঞ্জ সদর থানার ওসি মো. আবুল কালাম বলেন, ডাকাতির খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।