২০২০ সালকে মুজিব শতবর্ষ হিসেবে ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ সরকারের পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ-উপলক্ষ্যে আশ্রয় প্রকল্প-২ এর আওতায় প্রথমধাপে সারা দেশের ন্যায় শাল্লায়ও বেশকিছু লাল ঘর দেওয়া হয়। এরমধ্যে মুজিববর্ষের বেশকিছু লাল ঘর এখন মাদকের নিরাপদ স্থান হয়ে উঠেছে। প্রশাসন ও পুলিশের কঠোর তৎপরতা না থাকাকেই দায়ী করছেন স্থানীয়রা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুজিববর্ষে দেওয়া সেসব ঘরের মধ্যে অন্তত ৫০-৬০ টি ঘরে মাদক উৎপাদনের তথ্য পাওয়া গেছে। উপজেলার নারকিলা ও চিকাডুকি গ্রামের এসব ঘরে নিয়মিত নির্বিঘ্নে চোলাই মদ তৈরি করা হচ্ছে। এসব মাদক উৎপাদন বন্ধে উপজেলা প্রশাসন বা থানা পুলিশকে বড় ধরনের কোন অভিযান দিতে দেখা যায় নি। এতে চোলাই মদের কবলে পড়ে এলাকার তরুণ ও যুবকেরা সহজেই মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। ফলে এলাকায় হানাহানি,মারামারি ও খুন খারাপির মতো ঘটনাও ঘটেছে।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে,বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দেওয়া সে-সব লাল ঘরে উৎপাদিত মাদক অতি সহজলভ্য হওয়ায় মাদকের এই ভয়াল থাবা থেকে উটতি বয়সী অধিকাংশ যুবকেরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। ফলে মাদকের এই ছড়াছড়িতে এলাকায় অনেক দাঙ্গাহাঙ্গামার ঘটনা লেগেই আছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, উপজেলার নারকিলা ও চিকাডুকি গ্রামের লাল ঘরের মাদক ব্যবসায়িরা স্থানীয় খলাপাড়া বাজার,সরসপুরের পাশ্ববর্তী শ্মশানঘাট,দাউদপুর,শ্যামারচর,আনন্দপুর বাজার সহ ও হাওরের বিভিন্ন জায়গায় একদম প্রকাশ্যেই বিক্রি করে আসছে। এবং উৎপাদিত এসব চোলাই মদ পাশ্ববর্তী বানিয়াচং ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানেও পাচার হয়ে থাকে। আর এসবের অধিকাংশ মাদক উৎপাদন হচ্ছে হাসিনা সরকারের দেওয়া সরকারি ঘরে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবিদুল মিয়া নামের এক ব্যক্তি জানান,এলাকায় প্রকাশ্যে মদ বিক্রি হয়। প্রতিবাদ করার মত সাহস আমাদের থাকলেও সেই পরিস্থিতি নেই। প্রতিবাদ করলেই মাদকবিক্রেতারা আমাদের বাড়িঘরে হামলা চালায়। প্রশাসন ও পুলিশও এব্যাপারে তৎপর নয় বলে জানান তিনি।
এবিষয়ে শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন,মাদকের বিরুদ্ধে থানা পুলিশের কঠোর অবস্থান রয়েছে। তথ্য পাওয়া মাত্রই আমরা গুরুত্বের সাথে অভিযান চালাচ্ছি। অনেক মাদককারীদের ইতিমধ্যে গ্রেফতারও করা হয়েছে। এবিষয়টিও অতি গুরুত্ব সহকারে খোঁজখবর নিয়ে অভিযান চালানো হবে বলে জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, ইউএনওকে তথ্য দেন সে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবে। অথবা আমাকে এসএমএস করে তথ্য পাঠান আমি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বলে দিচ্ছি।