সাদাপাথর লুটের ঘটনায় কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলা ছিল কী না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এ ঘটনায় মন্ত্রী পরিষদ গঠিত তদন্ত কমিটির আহবায়ক ও মন্ত্রীপরিষদ সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) জাহেদা পারভীন।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জের সাদাপাথর পর্যটন কেন্দ্র ও রেলওয়ে বাংকার এলাকায় পাথর লুটের ঘটনায় বুধবার সকাল থেরক দুপুর পর্যন্ত গণশুনানি করেছে এই তদন্ত কমিটি।
দুপুরে সিলেট সার্কিট হাউসে গণশুনানী শেষে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক জানান, গণশুনানিতে মূলত দু'টি বিষয় ছিল প্রধান। এরমধ্যে একটি- কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব অবহেলা ছিল কি না, আর অপরটি- এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়।
এই দুই ইসূ্রতে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের নিকট থেকে সুপারিশ ও মতামত গ্রহণ করেছে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের গঠিত তদন্ত কমিটি।
সার্বিকভাবে পর্যালোচনা শেষে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার কথা জানান জাহেদা পারভীন।
এসময় সাংবাদিকদের কাছে তদন্তে প্রয়োজনীয় কোনো তথ্য থাকলে তা প্রদানের আহ্বান জানান মন্ত্রী পরিষদ সচিব।
বুধবার সকালে সিলেট সার্কিট হাউজে আয়োজিত গণশুনানি শুরু হয়। শুনানিতে অংশ নিয়ে নিজেদের বক্তব্য প্রদান করেন বিভাগীয় কমিশনার থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তা। পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও শুনানীতে অংশ নেন। এছাড়া পরিবেশবাদি সংগঠনের প্রতিনিধি, ট্রাক পরিবহন মালিক সমিতি, পাথর ব্যবসায়ী সমিতি ও পেসক্লাব নেতারাও শুনানিতে অংশ নিয়ে তদন্ত কমিটির কাছে বক্তব্য প্রদান করেন।
মন্ত্রী পরিষদ গঠিত উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি মঙ্গলবার থেকে কাজ শুরু করেছে। মঙ্গলবার তারা সরেজমিনে সাদাপাথর পরিদর্শন করে।
এরআগে গত ২০ আগস্ট মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের তদন্ত কমিটি গঠিত হয়।
সাদাপাথর লুটের ঘটনায় ইতোমধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রতিবেদনে সাদাপাথর লুটে বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠান ব্যক্তি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা মিলিয়ে ৫৩ জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে বলে জানিয়েছে দুদক। এতে বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি এসপি, ইউএনও, ওসি- সবাইকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক নেতা ও ব্যবসায়ীরা লুটপাটে জড়িত উল্লেখ করে তাদের ৪২ জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পাথর আত্মসাতের ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থাগুলোর নিষ্ক্রিয়তা ও যোগসাজশ ছিল।
এছাড়া জেলা প্রশাসন ঘটিত তদন্ত কমিটিও প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এই প্রতিবেদনে লুটে শতাধিক ব্যক্তির সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানানো হলেও কারো নাম প্রকাশ করা হয়নি।