অনুমতি ছাড়া দাড়ি রাখার শাস্তির ব্যাপারে হবিগঞ্জ পুলিশ সুপারে বক্তব্যকে বিকৃতি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার ও বিভ্রান্ত ছড়ানো জন্য গতকাল দুপুর ১১ঘটিকার সময় হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে, হবিগঞ্জ শহরের উল্লেখযোগ্য মসজিদের ইমাম ও খতিবদের কে নিয়ে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার এএনএম সাজেদুর রহমান। এসময় তনি বলেন,আমি নিজেও একজন ধার্মিক মুসলিম। আমি নিজেই দাড়ি রেখেছি, এবং আমার কর্মস্থলে আমার অধীনস্থ অনেক কর্মকর্তা আছেন যারা দাড়ি রেখেছেন, ইতিপূর্বে যারা দাড়ি রাখার জন্য অথবা মহিলা কর্মকর্তাগণ হিজাব পালনের জন্য অনুমতি চেয়েছেন, তাদেরকে আমি অনুমতি দিয়েছি, বর্তমানে যে তিনজন দাড়ি রাখার জন্য অনুমতি চেয়েছেন, আমি তাদেরকে দাড়ি রাখার অনুমতি প্রদান করেছি, আমি তাদেরকে দাড়ি রাখার জন্য কোন প্রকার শাস্তি দেই নাই, তাদেরকে লঘু শাস্তি দেওয়া হয়েছে মুলত আমাদের ডিপার্টমেন্টের নিয়ম শৃঙ্খলা ব্যাতয় ঘটানোর জন্য। তিনি ইমাম ও খতিবদের সামনে তিনি যে তাদেরকে দাড়ি রাখার অনুমতি দিয়েছেন সেই ডকুমেন্ট পেশ করেন , উপস্থিত ইমাম ও খতিবগণ ডকুমেন্ট দেখে আশ্বস্ত হন দাড়ি রাখার জন্য পুলিশ সুপার তাদেরকে কোন প্রকার শাস্তি প্রদান করেননি বরং তাদেরকে দাড়ি রাখার অনুমতি দিয়েছেন। উপস্থিত ইমাম ও খতিব গণের সামনে যে তিনজন দাড়ির রাখার জন্য আবেদন করেছিল তাদেরকে উপস্থিত করেন, তারা নিজেরাই বক্তব্য প্রদান করে, তাদেরকে যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে মুলত তা দাড়ি রাখার জন্য ছিল না, তাদেরকে লঘু শাস্তি প্রদান করা হয়েছে ডিপার্টমেন্টের নিয়ম-শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য।
পুলিশ সুপার আলেমদেরকে বলেন ডিপার্টমেন্টের কাগজপত্র কিভাবে পাবলিক প্রেসে প্রকাশ হয়েছে, যারা প্রকাশ করেছে মূলত তারা আমার বিরুদ্ধে প্রপাগাণ্ডা এবং আমাকে বিতর্কিত করার জন্য চেষ্টা করছে, এবং সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্য এই কাজ করেছে। তাই তিনি বিভিন্ন মসজিদের ইমাম ও খতিবগণকে বলেছেন যাতে এই ঘটনা কে নিয়ে সমাজে কোন ধরনের ভুল মেসেজ বা কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা যাতে সৃষ্টি না হয় এই ব্যাপারে সকল ইমাম ও খতিবগণ এবং রাজনীতিবিদগণ যেন সজাগ দৃষ্টি রাখার আহবান জানান এবং সঠিক ঘটনাটি তুলে ধরেন।
মত বিনিময় সভায় আলোচনা কালে উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জ কোর্ট জামে মসজিদের সম্মানিত খতিব মুফতি মোস্তাফিজুর রহমান, বাইতুল আমান জামে মসজিদের সম্মানিত খতিব মুফতি আলমগীর হোসেন, হবিগঞ্জ জেলা ইমাম ও খতিব সমিতির সম্মানিত সাধারণ সম্পাদক মুফতি কে এম এ ওয়াহাব নাঈমী, হবিগঞ্জ সদর মডেল থানা মসজিদের সম্মানিত ইমাম ও খতিব, হবিগঞ্জ জেলা বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুফতি কামরুল ইসলাম, আল এনাতাবাদ জামে মসজিদ হবিগঞ্জের সম্মানিত খতিব মুফতি হাফেজ জাকারিয়া আহমদ, ২নং পুল সুন্নী জামে মসজিদের সম্মানিত খতিব মুফতি আবুল বাশার হানাফী, হবিগঞ্জ কেন্দ্রিয় সুন্নী জামে মসজিদের সম্মানিত ইমাম ও খতিব মুফতী মো আব্দুল মজিদ পিরিজপুরীসহ আরো গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
এছাড়াও উক্ত বিষয়ে হবিগঞ্জ নুরুল হেরা জামে মসজিদের সম্মানিত খতিব হাফিজ মাওলানা মাসরুরুল হক হবিগঞ্জী ও হবিগঞ্জ জেলা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সম্মানিত সেক্রেটারী মোঃ শামসুল হুদা দ্বয়ের সাথে মোবাইল ফোনে আলোচনা হয়।
আলোচনাকালে এ বিষয়ে ইসলামী শরীয়া মোতাবেক দাড়ি রাখার বিষয়ে কোন শাস্তি দেওয়া হয়নি মর্মে দলিল দস্তাবেজ উপস্থাপনপূর্বক যথাযথভাবে আশ্বস্থ করা হয়। এতে সকলেই ঐকমত্য পোষণ করে হবিগঞ্জ জেলার আইন-শৃঙ্খলা ও ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এব্যাপারে হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার এএনএম সাজেদুর রহমান বলেন, আমার বিরুদ্ধে একটি চক্র ইচ্ছাকৃত ভাবে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ভুল তথ্য ভাইরাল করেছে। আলেশ সমাজ ও দেশের মানুষের কাছে ভুল তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। আজকের মত বিনিময় সভায় আলেম সমাজকে প্রকৃত তথ্যটি বুঝানো হয়েছে।