রবিবার, ২৪ আগস্ট ২০২৫
রবিবার, ২৪ আগস্ট ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
সিলেট বিভাগ

সেটেলমেন্ট অফিসের মিনি প্রেস স্থানান্তরে ভূমি সেবায় পিছিয়ে পড়বে

সিলেট জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসে স্থাপিত মিনি প্রেস ঢাকায় স্থানান্তরের প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সিলেটের ভুক্তভোগী ভূমি মালিকরা।

রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সাবেক অধ্যক্ষ ও কর্নেল (অব.) আতাউর রহমান পীর সিলেটবাসীর পক্ষে লিখিত বক্তব্যে বলেন, একটি কুচক্রী মহল দীর্ঘদিন ধরে সিলেটকে পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত করছে। তারই অংশ হিসেবে এবার সিলেট সেটেলমেন্ট অফিসের মিনি প্রেস ঢাকায় স্থানান্তরের ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আজ সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে সিলেটবাসীর অবস্থান পরিষ্কার করছি।

তিনি আরও জানান, ২০১২ সালে প্রবাসীবহুল সিলেট অঞ্চলের ভূমি মালিকদের সেবা সহজতর করতে তৎকালীন জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার ইউসুফ আলীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সিলেটে মিনি প্রেস স্থাপন করা হয়। এর ফলে দীর্ঘসূত্রতা কমে আসে, দ্রুত সময়ে খতিয়ান ও পরচা সরবরাহ সম্ভব হয় এবং সেবাগ্রহীতারা উপকৃত হন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সিলেট বিভাগে ১৯৮৭-৮৮ সালে শুরু হওয়া জরিপ কার্যক্রমে এখনও পর্যন্ত ৩৮টি মৌজার জরিপ অসম্পূর্ণ। বিশেষ করে হযরত শাহজালাল (র.) মাজার এলাকার খতিয়ান ছাপার কাজ এখনো শেষ হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে প্রেস সরানো হলে জরিপ কার্যক্রমে বড় ধরনের বিলম্ব ঘটবে, যা নতুন জটিলতা সৃষ্টি করবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ১২ আগস্ট ২০২৫ তারিখে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের পরিচালক (ভূমি রেকর্ড) মো. মোমিনুর রশীদের স্বাক্ষরিত একটি নির্দেশনা আসে, যার স্মারক নম্বর৩১.০৩.০০০০.০০৫.৩৩.১০০(খন্ড-১)১৪-৪৬৯। 

এতে বলা হয়, সিলেটে স্থাপিত মিনি প্রেসের কার্যক্রম বন্ধ করে খতিয়ানের সফট ডাটা ও সার্ভার ঢাকার সেটেলমেন্ট প্রেসে প্রেরণ করতে হবে।নির্দেশনার ১০ কর্ম দিবসের মধ্যেই এ কার্যক্রম শেষ করার কথা বলা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, ২০২১ সালেও একবার এ প্রেস ঢাকায় নেওয়ার চেষ্টা করা হলে সিলেটবাসীর প্রতিবাদের মুখে সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হয়েছিল। বক্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এবারও একই মহল আবার সক্রিয় হয়েছে।

এ বিষয়ে বলা হয়, সিলেটের সাবেক জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার কাজী মাহবুব উর রহমান ব্যক্তিগত অসন্তোষ ও অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে প্রেস স্থানান্তরের পক্ষে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে ঢাকায় প্রতিবেদন পাঠান। পরে তাকেও স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, সিলেট বিভাগ ইতিমধ্যেই একাধিক উন্নয়ন প্রকল্প বাতিলের শিকার হয়েছে। তারা এটিকে একটি সিলেট বিদ্বেষী পরিকল্পনার অংশ বলে উল্লেখ করেন। বক্তাদের ভাষ্যে, প্রেস সরানো হলে মৌজা জরিপ ও খতিয়ান প্রিন্টে বছরের পর বছর লেগে যাবে এবং সাধারণ ভূমি মালিকদের হয়রানি ও দুর্ভোগ বহুগুণ বেড়ে যাবে।

সাবেক অধ্যক্ষ ও কর্নেল (অব.) আতাউর রহমান পীর বলেন, আমরা ইতিমধ্যে মানববন্ধন করেছি, আজ সংবাদ সম্মেলন করলাম। যদি কর্তৃপক্ষ দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রেস স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত বাতিল না করে, তাহলে বৃহত্তর গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে। এ আন্দোলনে সকল সিলেটবাসী ও গণমাধ্যমকে পাশে চাই।”

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সমাজসেবী ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবুল কাসেম, সমাজসেবী ও ভুমিমালিক জাহেদ আহমদ, ভুমিমালিক কামাল উদ্দিন ভুইয়া, মুফতি রায়হান উদ্দিন মুন্না, প্রবাসী আব্দুল গফ্ফার, নাছির উদ্দিন, নুরুল ইসলাম লিমনসহ সিলেট বিভাগের বিভিন্ন উপজেলার ভূমি মালিক, নাগরিক সমাজ ও সচেতন মহলের প্রতিনিধিরা।

এই সম্পর্কিত আরো