রবিবার, ২৪ আগস্ট ২০২৫
রবিবার, ২৪ আগস্ট ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
সিলেট বিভাগ

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের আক্রোশের শিকার দপ্তরী!

সিলেটের জালালাবাদ থানার জাঙ্গাইলে অবস্থিত সফির উদ্দিন হাইস্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সীতেশ তালুকদারের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দূর্নীতি, স্বজন প্রীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ তুলেছেন একই প্রতিষ্টানের দপ্তরী মো. আরিফ বিল্লাহ। তাঁর আক্রোশে পরিণত হয়েছেন দপ্তরী আরিফ। যার ফলে তিনি এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

জানা যায়, বিগত ২১-২২ বছর ধরে তিনি উক্ত স্কুল এন্ড কলেজে একজন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী হিসেবে চাকুরী করে আসছেন। কিন্তু ১ ডিসেম্বর ২০২৪ ইং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পান সীতেশ তালুকদার। দ্বায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই চোখ পড়ে দপ্তরী আরিফের পোস্টের দিকে । 

সীতেশ তালুকদার তার মনোনিত নিকট আত্নীয়কে উক্ত পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লাগেন আরিফের উপর। আরিফকে পদে পদে কাজ করতে এক ধরনের স্টিমরোলার চালান সীতেশ। তাছাড়া তাকে কৌশলে চাকরি ছেড়ে দিতে নানাভাবে তার উপর মানসিক নির্যাতন চালান। আরিফ বিল্লাহ তার কোন অপরাধ না থাকা সত্তেও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছে হাত-পা ধরে মিনতি করেও মন গলাতে পারেনি। তার কথায় চাকরি তোমাকে ছাড়তেই হবে।

এছাড়া তার ছোটভাই, বড়ভাই ও স্ত্রী গিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সীতেশ তালুকদারের কাছে আরিফের কোন ভুল-ত্রুটি হলে মাফ করে দেওয়ার জন্য আকুতি করেন এবং কী ভুল-ত্রুটি হয়েছে জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দেননি।

পরিবারের মাফ চেয়েও মন গলেনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সীতেশ তালুকদারের উল্টো তার পরিবার আসায় আরোও ক্ষুব্ধ হয়ে তার সাথে অশালীন ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।

এমতাবস্থায় গত ১৪ জুলাই সিলেট জেলা প্রশাসক এবং পরবর্তীতে ১৩ আগস্ট তারিখে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করেন দপ্তরী মো. আরিফ বিল্লাহ।

অভিযোগ করার পর আরিফ বিল্লাহর উপর সীতেশ তালুকদারের নির্যাতনের খড়গ দিগুন বেড়ে যায়। অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য তাকে হুমকি - ধামকি প্রদর্শন করতে থাকেন এবং বলেন তোকে চাকরিচ্যুত করবো, আমার বিরুদ্ধে  অভিযোগ কেন দিলি- আমার হাত অনেক লম্বা, তুই আমার কিছুই করতে পারবিনা।

তাছাড়া , ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সীতেশ আরিফ নিয়মিত কর্মস্থলে গেলেও তাকে হুমকি দিয়ে হাজিরা খাতায় সাক্ষর দিতে দেন না এবং তার স্থানীয় বেতন আটকে রেখেছেন। যার ফলে আরিফ তার পরিবার নিয়ে অসহায় জীবনযাপন করছেন।

জানা যায়, আরিফ স্ত্রী, ২ মেয়ে ও ১ ছেলেকে নিয়ে তিনি জাঙ্গাইল বসবাস করেন ।তার উপর সংসারের সকল দ্বায়-দ্বায়িত্ব । ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা ভরণপোষণ সবকিছুই তার প্রতিষ্টানে পাওয়া বেতন থেকে খরছ করেন। সীতেশ তালুকদারের কারণে তার ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। এমতাবস্তায় স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে তিনি মানবেতর জীবনযাপন করছেন। 


সফির উদ্দিন হাইস্কুল এন্ড কলেজের হাইস্কুল শাখার চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী (দপ্তরী) অভিযোগকারী- আরিফ বিল্লাহ সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমার কি দোষ আমার সাথে তিনি এ ধরনের আচরণ কেন করছেন, আমি জানি না। আমি ২২ বৎসর যাবৎ প্রতিষ্টানে কাজ করছি আমার সাথে এরকম অন্যায় কখনো হয় নি। বর্তমানে আমার বাচ্চাদের নিয়ে অসহায় অবস্থায় আছি। আমি অপারগ হয়ে সিলেটের মাননীয় জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে ন্যায়বিচার চেয়ে অভিযোগ দিয়েছি । আমি বিচার চাই।

অভিযুক্ত সফির উদ্দিন হাইস্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ - সীতেশ তালুকদার বলেন, এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা , আপনি কলেজে এসে চা খেয়ে যাবেন।


সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও  সফির উদ্দিন হাইস্কুল এন্ড কলেজের  এডহক কমিটির সভাপতি খোশনূর রুবাইয়াৎ জানান, আমি এবিষয়ে তদন্ত কমিটি হয়েছে। রিপোর্ট এখনো পায়নি, রিপোর্ট পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিলেট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সাঈদ আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত আরিফ সাহেবকে আমার কাছে পাঠাবেন। আমি আগেও সীতেশ তালুকদার সাহেবকে এ বিষয়ে অবগত করেছি।


সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলমের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

এই সম্পর্কিত আরো