সোমবার, ১৮ আগস্ট ২০২৫
সোমবার, ১৮ আগস্ট ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
সিলেট বিভাগ

পাথর লুট নিয়ে সমালোচনার মধ্যে সিলেটের ডিসি মুরাদকে বদলি

সিলেটের জাফলং ও সাদাপাথর এলাকার পাথর লুট নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার মধ্যেই সিলেট জেলা প্রশাসককে (ডিসি) বদলি করা হয়েছে। সোমবাার (১৮ আগস্ট) সিলেটের ডিসি শের মাহবুব মুরাদকে বদলির আদেশ দেওয়া হয়।

মুরাদের বদলে সিলেটের নতুন ডিসি হিসেকে পদায়ন করা হয়েছে আলোচিত ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারোয়ার আলম।

শের মাহবুব মুরাদ গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর সিলেটের জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেন। তার সময়েই সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ ও সাদাপাথরসহ বিভিন্ন কোয়ারি থেকে ব্যাপক বালু ও পাথর লুটের অভিযোগ রয়েছে।

সাদাপাথরে নজিরবিহীন পাথর লুট নিয়ে সাম্প্রতি দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এরপর থেকেই পাথর লুটপাটে প্রশাসনের উদাসীনতা ও ব্যর্থতার বিষয়টি ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়।

রোববার পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানও বলেন, পাথর লুটে স্থানীয় প্রশাসনের দায় রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পরিবেশ উপদেষ্টার এমন বক্তব্যের পরদিনই সিলেটের জেলা প্রশাসককে বদলি করা হলো।

এর আগে সাদা পাথর পরিদর্শনে গিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তারাও পাথর লুটে স্থানীয় প্রশাসনের ব্যর্থতা রয়েছে বলে জানান।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এদিকে, সোমবার (১৮ আগস্ট) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সিলেট এর জেলা প্রশাসক হিসেবে মো. সারোয়ার আলমকে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাঠ প্রশাসন-২ শাখা থেকে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের কর্মকর্তা সারোয়ার আলমকে সিলেট জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পদে বদলি ও পদায়ন করা হলো।

প্রসঙ্গত, সারা দেশে ৫১টি কোয়ারি (পাথর ও বালু উত্তোলনের নির্দিষ্ট স্থান) আছে। এর মধ্যে সিলেটের কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুরে আছে আটটি পাথর কোয়ারি। এর বাইরে সিলেটে সাদাপাথর, জাফলং, বিছনাকান্দি, উৎমাছড়াসহ আরও ১০টি জায়গায় পাথর আছে। এসব জায়গা পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। সীমান্তের ওপারে ভারতের পাহাড়ি নদী থেকে এসব পাথর আসে। ২০২০ সালের আগে সংরক্ষিত এলাকা বাদে সিলেটের আটটি কোয়ারি ইজারা দিয়ে পাথর উত্তোলনের সুযোগ দেওয়া হতো। তবে পরিবেশ ও প্রতিবেশের ক্ষতির কারণে ২০২০ সালের পর আর পাথর কোয়ারি ইজারা দেওয়া হয়নি।

সিলেটের ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক দলের নেতারা সব সময় পাথর উত্তোলনের পক্ষে জোরালো অবস্থান নেন। বিগত পাঁচ বছরে তাঁরা নানাভাবে কোয়ারি ইজারা আবার চালুর চেষ্টা করেছেন, কিন্তু সরকার অনুমতি দেয়নি। এ অবস্থায় রাতের বেলা আড়ালে–আবডালে মানুষ অবৈধভাবে পাথর তুলতেন। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর টানা এক বছর দেদার পাথর লুটপাট চলে।

এই সম্পর্কিত আরো