সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর আলমকে একটি পুরোনো মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ভোরে কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি যৌথ দল তাঁর নিজ বাসা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে।
তবে স্থানীয়দের দাবি ‘ধলাই সেতু রক্ষা আন্দোলন’র আহ্বায়ক আলমগীর আলম চেয়ারম্যানের প্রতিপক্ষরা তাকে সামাজিকভাবে ঘায়েল করতে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সাদাপাথর লুটপাটের ঘটনায় আটক হয়েছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমকে মিথ্যে তথ্য দিয়ে তা ছড়িয়ে দিয়েছে। এ নিয়ে তাঁর ইউনিয়নসহ কোম্পানীগঞ্জের সাধারণ মানুষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের দাবি তাকে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের দোসরের দায়েরকৃত একটি মামলায় আটক করা হলেও সাদাপাথর লুটপাটকারী বলে চালিয়ে দিচ্ছে একটি ষড়যন্ত্রকারী মহল।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকালে অভিযান চালিয়ে তাকে নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার কর হয়া। কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর কোম্পানীগঞ্জে পাথর লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে পরিবেশবাদী সংগঠন ‘ধলাই সেতু রক্ষা আন্দোলন’র সাধারণ মানুষকে নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ, সেমিনার, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন কোম্পানীগঞ্জের পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর আলম। তাছাড়া সাদাপাথর, রোপওয়ে বাঙ্কার থেকে পাথর লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে তিনি সোচ্চার ছিলেন। এই আন্দোলন-সংগ্রামের কারণে পাথর লুটপাটকারী একটি চক্রের চক্ষুশূলে পরিণত হন পরিবেশবাদী সংগঠন ‘ধলাই সেতু রক্ষা আন্দোলন’র আহ্বায়ক, সিলেট জেলা কৃষকদলের যুগ্ম সম্পাদক ও পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর আলম। তাঁর ফেইসবুক ঘুরে পাথর লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে একাধিক স্ট্যাটাস ও ভিডিও দেখা গেছে। তবে সম্প্রতি সাদাপাথর লুটপাট নিয়ে দেশজুড়ে প্রতিবাদের মুখে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ একটি মামলায় পরিবেশবাদী আন্দোলনের নেতা ও পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর আলমকে বৃহস্পতিবার ভোরে তার বাসা থেকে গ্রেফাতার করে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। পতিত আওয়ামী লীগ সরাকারে আমলে ২০২৪ সালের ২৬ মার্চে দায়ের করা একটি মামলায় তিনি গ্রেফতার হলেও তার প্রতিপক্ষরা সাদাপাথার লুটপাটে তিনি গ্রেফতার হয়েছেন বলে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে মিথ্যে তথ্য দিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অপপ্রচার ছড়িয়ে দিতে থেমে নেই
চেয়ারম্যান আলমগীর আলমের পরিবারের দাবি, তিনি ষড়যন্ত্র এবং মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার। পরিবারের সদস্যরা বলছেন, আলমগীর আলম দীর্ঘদিন ধরে 'ধলাই সেতু রক্ষা আন্দোলন' নামে একটি পরিবেশবাদী সংগঠনের আহ্বায়ক হিসেবে পাথর লুটপাটের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। এই আন্দোলন-সংগ্রামের কারণে তিনি পাথর লুটপাটকারী একটি চক্রের চক্ষুশূলে পরিণত হন। তাঁদের অভিযোগ, ২০২৪ সালের ২৬ মার্চ শিপলু কুমার দে-এর দায়ের করা একটি ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করা হলেও, একটি স্বার্থান্বেষী মহল গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করছে যে তাঁকে সাদাপাথর লুটপাটের অভিযোগে আটক করা হয়েছে। এতে চেয়ারম্যান ও তাঁর পরিবার সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছেন বলে তাঁরা জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কোম্পানীগঞ্জের একজন স্থানীয় সাংবাদিক জানান, চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন পাথর রক্ষার আন্দোলনে সক্রিয় থাকায় একটি প্রভাবশালী চক্র তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। এরই অংশ হিসেবে পুরোনো একটি মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করানো হয়েছে। তবে ষড়যন্ত্রকারীরা গণমাধ্যমকে ভুল তথ্য দিয়ে সাদাপাথর লুটের ঘটনায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে প্রচার চালাচ্ছে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান জানান, পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে আলমগীর আলম পুরোনো একটি মামলা গ্রেফাতর করা হয়েছে।