মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় দলীয় গঠনতন্ত্র অমান্য করে স্যোসাল মিডিয়ায় বক্তব্য দেয়ার কারণে বরমচাল ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান আহবায়ক কমিটির সদস্য সাখাওয়াত হোসেন খানকে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছে উপজেলা বিএনপি।
১০ আগস্ট উপজেলা বিএনপির আহবায়ক রেদওয়ান খাঁন, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক বদরুল হোসেন খান ও যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল জলিল জামাল স্বাক্ষরিত একটি চিঠির মাধ্যমে সেটি নিশ্চিত করা হয়। চিঠির কপি গণমাধ্যমেও পাঠানো হয়। যার অনুলিপি দেয়া হয়েছে জেলা বিএনপির আহবায়ক ও সদস্য সচিবের কাছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দের নির্দেশ অমান্য করে এবং দলের গঠনতন্ত্র অমান্য করে স্যোসাল মিডিয়ায় মনগড়া বক্তব্য দিয়ে বরমচাল ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিল বাঁধাগ্রস্থ করার হীন মন্যতার কারণে আপনার বিরুদ্ধে কেন দলীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না আগামী ২৪ ঘন্টার (সোমবার ১১ ঘটিকা থেকে মঙ্গলবার সকাল ১১ ঘটিকার) মধ্যে লিখিতভাবে জানানোর নির্দেশ দেওয়া গেল।
এদিকে রোববার (১০) আগস্ট বিকেলে কুলাউড়া শহরের একটি রেষ্টুরেন্টে যুবলীগ নেতা আজমল আলী শাহ সেন্টুর উপস্থিতিতে বরমচাল ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির পাঁচজন নেতাসহ বিএনপির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে মনগড়া অভিযোগ এনে বিভিন্ন অপপ্রচার করে বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা সাখাওয়াত হোসেন। সেই সংবাদ সম্মেলনের প্রায় ছয় ঘন্টা পর সাখাওয়াত হোসেন খানকে কারণ দর্শানো নোটিশ দিল উপজেলা বিএনপি।
জানা গেছে, গত ৭ আগষ্ট বিকেলে সিংগুর উচ্চ বিদ্যালয় হলরুমে ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে উপজেলা নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কাউন্সিল সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কাউন্সিলে বিএনপি নেতা ফখরুল ইসলাম সভাপতি, শফিক উদ্দিন সাধারণ সম্পাদক ও সাহেদ মিয়া সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। ভোট গ্রহণ শেষে ফলাফল ঘোষণা করেন বরমচাল ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল জহুর ডেন। কাউন্সিলে নির্বাচিত সেই কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে মনগড়া বক্তব্য দিয়ে বরমচাল ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিল বাঁধাগ্রস্থ করার জন্য নানা অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছেন বিএনপি নেতা সাখাওয়াত হোসেন। বরমচাল ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আজমল আলী শাহ সেন্টু’র মদদে এসব ষড়যন্ত্র করছেন বলে জানা গেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কুলাউড়া উপজেলার বরমচালে ইউনিয়নে আজমল আলী শাহ সেন্টু নামক এক যুবলীগ সভাপতিকে বিএনপির কমিটিকে স্থান করে দেবার কথা বলে কয়েক লক্ষ টাকা নিয়ে ইউনিয়ন কমিটিতে স্থান করে দেন বিএনপি নেতা সাখাওয়াত হোসেন। এ ঘটনায় ফুঁসে উঠে স্থানীয় বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা, অনলাইন পোর্টাল, স্থানীয় গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সমালোচনার ঝড় উঠলে জেলা বিএনপির নির্দেশে আজমল আলী শাহ সেন্টু নামক ওই যুবলীগ নেতাকে বহিস্কার করে বরমচাল ইউনিয়ন বিএনপি। যেটি দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এতে বিপাকে পড়েন বিএনপি নেতা সাখাওয়াত হোসেন। টাকা ফেরত দেয়ার ভয়ে তিনি ওই যুবলীগ নেতাকে নিয়ে বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে নানা কুৎসা ও অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছেন।
যুবলীগ নেতা আজমল আলী শাহ সেন্টুকে সাথে নিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন ও অপপ্রচার প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা সাখাওয়াত হোসেন এই প্রতিবেদকের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ঔদ্ধত্যর্পূণ আচরন করে মুঠোফোনে বলেন, এসব ফাউল কথা। সেন্টু কোথায় থেকে সংবাদ সম্মেলনে ছিল। যুবলীগ নেতা সেন্টুর কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে তাকে পুনবার্সন করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে বলেন, আপনি কোন অথরিটি নিয়ে কথা বলছেন। একপর্যায়ে তিনি মেজাজ হারিয়ে ফোন কেটে দেন।
কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক বদরুল হোসেন খান বলেন, বর্তমান সময়ে আমাদের দলের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রে যারা লিপ্ত রয়েছেন তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা। দলের গঠনতন্ত্র অমান্য করে স্যোসাল মিডিয়ায় মনগড়া বক্তব্য দিয়ে বরমচাল ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিল বাঁধাগ্রস্থ করার কারণে সাখাওয়াত হোসেনকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়েছে।