সোমবার, ১১ আগস্ট ২০২৫
সোমবার, ১১ আগস্ট ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
সুনামগঞ্জে কৃষকদের মাঝে স্প্রে  মেশিন ও সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজে পরিচিতিমূলক ক্লাস অনুষ্ঠিত হবিগঞ্জের বাল্লা স্থলবন্দরের কার্যক্রম স্থগিতের সিদ্ধান্ত সরকারের দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গুপ্ত রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি ছাত্রদল সভাপতির ভারতের মেঘালয়ে আ. লীগ পরিচয়ধারীসহ চার বাংলাদেশি আটক প্রবাসী সাংবাদিক দিপু - কুলাউড়াকে পরিবর্তন করতে যেকোনো সহায়তায় আমি প্রস্তুত সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির মানববন্ধন তামাবিল স্থলবন্দর ও কাস্টমসে অনিয়মই এখন নিয়ম রায়হান হত্যা: জামিনে মুক্ত এসআই আকবর লাগামহীন লুটপাটে ‘পাথরহীন’ সাদাপাথর
advertisement
সিলেট বিভাগ

লাগামহীন লুটপাটে ‘পাথরহীন’ সাদাপাথর

লাগামহীন লুটপাটে প্রায় পাথরহীন হয়ে পড়েছে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পর্যটন এলাকা সাদাপাথর।

সম্প্রতি পাহাড়ি ঢলের সাথে ধলাই নদের উৎসমুখ সাদাপাথরে বিপুল পরিমাণ পাথর আসে। প্রকাশ্যেই সেই সব পাথর নৌকা করে নিয়ে লুট করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন শত শত নৌকা দিয়ে লুটের পাথর পরিবহন করা হচ্ছে। নদী তীরের বালিও মাটি খুঁড়েও চলছে লুট।

ব্যাপক লুটপাটের কারণে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত এ এলাকাটি একেবারে বিরাণভূমিতে পরিণত হয়েছে। প্রশাসনের সামনেই দিনদুপুরে চলছে লুটপাট।

সকাল থেকে সাদা পাথর এলাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ফাঁড়ি এলাকা মাড়িয়ে জিরো পয়েন্ট দিয়ে পাথর লুট হচ্ছে।

সরেজমিনে জানা গেছে, গত দুই সপ্তাহে সাদা পাথর এলাকায় কয়েক দফা পাহাড়ি ঢল নামে। প্রতিবারই ঢলের তোড়ে স্তরে স্তরে পাথর ও বালু নামে। এবার দফায় দফায় ঢলের পর শুধু বালু দেখা গেছে। বালুর স্তর সরিয়ে পাথর লুটপাট হয়েছে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, দুই সপ্তাহে অন্তত শতকোটি টাকার পাথর লুট হয়েছে।

সাদা পাথর প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট একটি পর্যটনকেন্দ্র। ২০১৭ সালে পাহাড়ি ঢলে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ পাথরমহালের ধলাই নদের উৎসমুখে পাঁচ একর জায়গাজুড়ে জমা হয় পাথর। ঢলের তোড়ে সেখানে সর্বশেষ ১৯৯০ সালে একবার পাথর জমা হয়েছিল। সেসব পাথরকে ‘ধলাসোনা’ বলে অভিহিত করা হয়। তবে পাহাড়ি ঢলের পর লুটপাটে সেসব পাথর নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল। ২৭ বছরের মাথায় ফের পাথর জমা হওয়ায় উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের পাহারায় সংরক্ষিত হয়। ওই বছর থেকে পুরো এলাকাটি প্রাকৃতিক পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পায়।

সাদা পাথর এলাকার ওপারে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পাহাড়ি অঞ্চল লুংলংপুঞ্জি ও শিলংয়ের চেরাপুঞ্জি। সেখানকার ঝরনা থেকে সারা বছর নদের পানি প্রবহমান থাকে। বৃষ্টিবহুল চেরাপুঞ্জির পাদদেশ থেকে বর্ষায় ঢলের পানির সঙ্গে পাহাড় থেকে পাথরখণ্ড এপারে নেমে আসে। ভেসে আসা এই পাথর উত্তোলিত বা আমদানি করা পাথরের চেয়ে দামি। এটির কদরও বেশি। ব্যবহৃত হয় স্থাপত্যকাজে।

সাদা পাথর পর্যটন সৃষ্টি ও তদারকিসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের মার্চ মাস থেকে মধ্য জুলাই পর্যন্ত মোট ১৩ দফা পাহাড়ি ঢল নেমেছিল। তখন উপজেলা প্রশাসন প্রাথমিকভাবে হিসাব করেছে ঢলের তোড়ে ওপার থেকে পাথরের অন্তত ১৩টি আস্তরণ পড়ে। পাঁচ একর জায়গার ওপরে অন্তত ২০ ফুট পুরু পাথরের স্তর জমে। তখন উপজেলা প্রশাসন লুটপাট ঠেকিয়ে পাথরগুলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করে। ২০১৭ সাল থেকে এটি সাদা পাথর পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিচিতি পায়।

সাদা পাথর এলাকাটির অবস্থান কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী পশ্চিম ইসলামপুর ইউনিয়নে।

২০১৭ সালে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন শাহ মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসনের চেষ্টায় সেসব পাথর সংরক্ষিত হয়েছিল। তখনকার জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার ও ইউএনও আবুল লাইছ নিজ উদ্যোগে পাহারার ব্যবস্থা করেছিলেন। এরপর উপজেলা প্রশাসন সংরক্ষণের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে। সর্বশেষ সুমন আচার্য ইউএনও থাকাকালে সাদা পাথর নিয়ে একটি মহাপরিকল্পনা তৈরি করেন। সেটি বাস্তবায়ন না হওয়ায় এলাকাটি ঝুঁকির মুখে পড়ে।

সাদা পাথর যাওয়ার ঘাট হিসেবে পরিচিত ধলাই নদতীরের ভোলাগঞ্জের ১০ নম্বর এলাকা। সেখানকার স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, পাহাড়ি ঢল নেমে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পর্যটকরা সাদা পাথরে যাচ্ছেন না। এই সুযোগে চলছে লুটপাট। গত এক সপ্তাহে দিন ও রাতে হাজারখানেক বারকি নৌকা ব্যবহার করে পাথর লুট হয়েছে। অনেকটা মব স্টাইলে হওয়ায় ভয়ে পুলিশ প্রশাসনও ছিল সাক্ষী-গোপালের ভূমিকায়।

সার্বিক পরিস্থিতিতে সমন্বিত পদক্ষেপ ছাড়া পুলিশের পক্ষে একা কিছু করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের মাহমুদ আদনান। তিনি বলেন, ‘সাদা পাথর লুটের ঘটনার খবর পেলেই ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে স্পেশাল টাস্কফোর্সের টিম অভিযান চালায়। আমরা পুলিশ দিয়ে সহযোগিতা করছি। এর বাইরে কী আর করার আছে।’

লুট ঠেকাতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী। তিনি বলেন, ‘সাদা পাথর পর্যটন স্পট খুঁড়ে পাথর উত্তোলনের ভিডিওটি আমি দেখেছি। পর্যটন স্পটে এ ধরনের কাজ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। একটি টিম সেখানে পাঠিয়েছি পরিদর্শনের জন্য। অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন বন্ধে আমরা পুলিশ, বিজিবির সমন্বয়ে অভিযান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

এই সম্পর্কিত আরো

সুনামগঞ্জে কৃষকদের মাঝে স্প্রে  মেশিন ও সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ

বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজে পরিচিতিমূলক ক্লাস অনুষ্ঠিত

হবিগঞ্জের বাল্লা স্থলবন্দরের কার্যক্রম স্থগিতের সিদ্ধান্ত সরকারের

দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গুপ্ত রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি ছাত্রদল সভাপতির

ভারতের মেঘালয়ে আ. লীগ পরিচয়ধারীসহ চার বাংলাদেশি আটক

প্রবাসী সাংবাদিক দিপু কুলাউড়াকে পরিবর্তন করতে যেকোনো সহায়তায় আমি প্রস্তুত

সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির মানববন্ধন

তামাবিল স্থলবন্দর ও কাস্টমসে অনিয়মই এখন নিয়ম

রায়হান হত্যা: জামিনে মুক্ত এসআই আকবর

লাগামহীন লুটপাটে ‘পাথরহীন’ সাদাপাথর