সুনামগঞ্জের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ও সাবেক নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ সাদিকসহ ১২ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত। বিএনপির দায়ের করা মামলায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ, ৯ জন নির্বাচন কমিশনার ও দুই নির্বাচন কমিশন সচিবসহ ১২ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রদ্রোহ ও জনগণের ভোট ছাড়া’ নির্বাচন করার অভিযোগে শেরেবাংলা নগর থানায় বিএনপির করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (৭আগস্ট) ঢাকার মহানগর হাকিম মিনহাজুর রহমান এ আদেশ দেন।
তদন্ত কর্মকর্তার আবেদন অনুযায়ী দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা পাওয়া অন্যরা হলেন- নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবু হাফিজ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. জাবেদ আলী, মো. শাহ নেওয়াজ, মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান, মো. আলমগীর, মো. আনিছুর দরহমান, সাবেক নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ ও সাবেক নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ সাদিক।
প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য দিয়েছেন।
আদালতের আদেশে বলা হয়, আসামিরা বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। মামলাটি সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামিদের বিদেশ গমন বাতিল করার জন্য এসএস ইমিগ্রেশন (প্রশাসন) ও এসবিকে প্রয়োজনীয় আদেশ প্রদানের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তা আবেদন করেছেন। আবেদনসহ নথি পর্যালোচনা করলাম। সার্বিক পর্যালোচনায় তদন্তকারী কর্মকর্তার দাখিলকৃত আবেদন মঞ্জুর করা হলো। এ মামলার পলাতক আসামিদের বিদেশ গমন বাতিলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এসএস ইমিগ্রেশন (প্রশাসন) ও এসবিকে নির্দেশ প্রদান করা হলো।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ আমলে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আসামি করে মামলা করে বিএনপি। মামলায় মোট ২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। গত ২২ জুন বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. সালাহউদ্দিন খান বাদী হয়ে এ মামলা করেন। এছাড়া সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার, এ কে এম শহীদুল হক, জাবেদ পাটোয়ারী, বেনজির আহমেদ ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও আসামি করা হয়েছে এই মামলায়।
এরপর মামলায় রাষ্ট্রদ্রোহ, প্রতারণা ও বিশ্বাস ভঙ্গের ধারা যোগ করা হয়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ওই তিন নির্বাচনে গায়েবী মামলা, অপহরণ, গুম খুন ও নির্যাতনের ভয় দেখিয়ে, বিএনপি নেতাকর্মীদের গণগ্রেপ্তার করে নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখা হয়। সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে থাকার পরও সংবিধান লঙ্ঘন, নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন, সরকারি কর্মচারী হয়েও অবৈধভাবে ভোটে হস্তক্ষেপ, ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোটের কাজ সম্পন্ন করা ও জনগণের ভোট না পেলেও সংসদ সদস্য হিসেবে মিথ্যাভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।