বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট ২০২৫
বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
সিলেট বিভাগ

সড়কে আর কত প্রাণ ঝরলে সচেতন হবে সমাজ ও রাষ্ট্র

সড়কে আর কত প্রাণ ঝরলে সচেতন হবে এই সমাজ, এই রাষ্ট্র। সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে এমনই মন্তব্য করেছেন গণমাধ্যমকর্মী হিল্লোল পুরকায়স্থ। এ ছাড়াও বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংবাদিকসহ সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষজন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

সড়ক দুর্ঘটনায় সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (CSE) বিভাগের শিক্ষার্থী স্নেহা চক্রবর্তী ও সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইন্সটিটিউটের মেধাবী শিক্ষার্থী খুশির মৃত্যুর ঘটনায় এই ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা।

বুধবার (৬ আগস্ট) বিকালে সুনামগঞ্জের বাহাদুরপুর এলাকায় বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই শিক্ষার্থীসহ তিনজন নিহত হন।এ ঘটনায় গুরুতর আহত হন চালকসহ আরও দুই যাত্রী।

প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকসহ সচেতন মহলে ক্ষোভের সঞ্চায় হয়েছে। ফিটনেসবিহীন গাড়ি, অদক্ষ ও বেপরোয়া চালকই সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ বলে মত প্রকাশ করেছেন তাঁরা। ফেসবুক পোস্টের উল্লেখযোগ্য অংশগুলো তুলে ধরা হলো:

এ বিষয়ে নিজের ফেসবুক আইডিতে সংবাদকর্মী আব্দুল বাছির লেখেন, লাইসেন্স বিহীন ড্রাইভারদের থামান? নইলে আগামীকাল আমদেরকেও লাশ হতে হবে। 

ফয়জুল হক লিখেছেন, সড়কে মৃত্যুর মিছিল কবে থামবে? কবে বাংলাদেশের সড়ক নিরাপদ হবে ??

অমিত দেব লিখেছেন, সিলেট -সুনামগঞ্জ যত ফিটনেসবিহীন গাড়ি সব বন্ধ করা দরকার। গাড়ির গতিসীমা বেশি থাকে, তারা ওভারটেক করার সময় ছোট গাড়ি তাদের চোখে পড়ে না। তাদের গাড়ির হেড লাইট থাকে না গাড়ির হর্ন বাজনা, ব্রেক ঠিকমত কাজ করে না। 

অ্যাড. আইন উদ্দিন লিখেছেন, যে দেশে টাকার বিনিময়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া যায়। সেই দেশে নিরাপদ সড়ক কখনো হবে না।

সাংবাদিক হিল্লোল পুরকায়স্থ লিখেছেন, আজ হারাল একটি পরিবারের স্বপ্ন, একটি সম্ভাবনা, একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। 

স্নেহা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির মাধ্যমে এক নতুন অধ্যায় শুরু করেছিল। অথচ আজ সব স্বপ্ন থেমে গেল এক ভয়াবহ দুর্ঘটনায়। তার ছোট ভাই বিশ্বজিৎ চক্রবর্ত্তী বর্তমানে সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।
এই অসময়ে পরিবারের দুঃখ ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। মা-বাবার স্নেহময় স্বপ্ন আজ পথেই থেমে গেল।

আর কত প্রাণ ঝরলে সচেতন হবে এই সমাজ, এই রাষ্ট্র?

নোহান আরেফিন নেওয়াজ লিখেছেন, বাস-সিএনজি সংঘর্ষে জন্মদিনেই নিভে গেল খুঁশির জীবন প্রদীপ!

কথা ছিল বাসায় ফিরে সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে জন্মদিন পালন করবে সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইন্সটিটিউটের মেধাবী শিক্ষার্থী খুঁশি।

তিনি আরও লিখেছেন, অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, বেপরোয়া ড্রাইভিং আর সরকারের ব্যর্থতার কারণে সড়কে আর কত প্রাণ যাবে? 

সাংবাদিক সুহান লিখেছেন, এই দৃশ্য সহ্য করার মতো না। সড়ক দুর্ঘটনায় একটি পরিবারের স্বপ্নের সলিলসমাধি। মেধাবী স্নেহা সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে বাড়ি ফিরছিলো। পথেই জীবনের বেদনাদায়ক সমাপ্তি।

নিহত স্নেহার বান্ধবী চৌধুরী তাবাসসুম পাশা নিশিতার অনলাইন পোর্টালে লেখার অংশবিশেষ তুলে ধরা হলো- স্নেহা নিজের মেধা ও পরিশ্রমে সে সুযোগ পেয়েছিল সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (CSE) বিভাগে। আমাদের সবাইকে গর্বিত করেছিল সে। আমরা তাকিয়ে ছিলাম তার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে।

কিন্তু সে ভবিষ্যত আর গড়ে ওঠে না। ঘাতক বাস কেড়ে নিল স্নেহাসহ তিনটি তাজা প্রাণ।

হাসপাতালে স্নেহার মায়ের কান্না বুক ভেঙে দেওয়ার মতো। তার ছোট ভাই ‘দিদি, দিদি’ বলে কাঁদছে, কিন্তু সে দিদি আর কোনোদিন ফিরে আসবে না। মা-বাবা সন্তান হারিয়ে আজ পাগলপ্রায়।

এই দুর্ঘটনা ছিল শুধু একটি গাড়ি দুর্ঘটনা নয়, এটি ছিল আমাদের ব্যর্থ পরিবহন ব্যবস্থার নির্মম প্রতিচ্ছবি।

এই সম্পর্কিত আরো