বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট ২০২৫
বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
সিলেট বিভাগ

সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রে নিরাপত্তাহীনতা: মৃত্যুর মিছিল বাড়ছেই

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি হিসেবে পরিচিত সিলেট। সবুজ পাহাড়, ঝর্ণা আর স্বচ্ছ নদীর টানে প্রতিবছর এখানে ছুটে আসেন প্রায় পাঁচ লাখ পর্যটক। তবে এ সৌন্দর্যের আড়ালে লুকিয়ে আছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা—নিরাপত্তার অভাব। গত এক দশকে সিলেটের পর্যটন স্পটগুলোতে ভ্রমণে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩৩ জন পর্যটক।

 

জাফলং, সাদাপাথর, বিছানাকান্দি, লালাখালসহ জনপ্রিয় পর্যটন এলাকাগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগীরা। বিপদের সময় পাওয়া যায় না উদ্ধারকারী দল বা পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক। অনেক জায়গায় নেই সঠিক নির্দেশনা কিংবা সতর্কতা চিহ্ন। কোথাও কোথাও সাইনবোর্ড থাকলেও তা অত্যন্ত অপ্রতুল।

 

একজন পর্যটকের ভাষায়, "সব কিছু যেন চালিত হচ্ছে স্বেচ্ছাচারিতায়। প্রশাসনের নজরদারি নেই, স্বেচ্ছাসেবকও নেই।" আরেকজন বলেন, "যারা পানিতে ডুবে যায়, তাদের উদ্ধারে তেমন কোনো ব্যবস্থা দেখি না।"

 

এ বিষয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মতিউর রহমান জানান, শুধু অব্যবস্থাপনা নয়, পর্যটকদের অসচেতন আচরণও দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। তিনি বলেন, "আমরা নিয়মিত মাইকিং করি, লিফলেট দিই। আইন মেনে চললে দুর্ঘটনা কমবে।"

 

জেলা প্রশাসক শেখ মাহবুব মুরাদ বলেন, "নির্দেশনা টাঙানো রয়েছে। লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে, এবং সবাইকে তা ব্যবহারে বাধ্য করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।" তিনি আরও জানান, স্বেচ্ছাসেবকের সংখ্যাও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

 

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বর্ষা মৌসুমে নদীগুলোর স্রোত বেড়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ে। পাথর ও বালু উত্তোলনের কারণে নদীপথে সৃষ্টি হয়েছে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল।

 

পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শুধুমাত্র নির্দেশনা বা লিফলেটই যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন পর্যাপ্ত প্রশিক্ষিত কর্মী, দ্রুত উদ্ধার ব্যবস্থা এবং পর্যটন স্পটে বাস্তবভিত্তিক নজরদারি। অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে সিলেটের পর্যটন খাত বড় ধরনের সংকটে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সচেতন নাগরিকরা।

এই সম্পর্কিত আরো