তিন দফায় প্রায় ২০ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন ছিল হবিগঞ্জ জেলা। শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হলেও তা এখনো স্বাভাবিক হয়নি। এলাকা ভাগ করে প্রতি ১ থেকে ২ ঘণ্টা পরপর কিছু সময়ের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে কতৃপক্ষ।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা থেকে দুইবার আসা যাওয়া করলেও সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে টানা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়ে। এদিকে শাহজীবাজার পাওয়ার গ্রিডে অগ্নিকাণ্ডে ৩টি ট্রান্সফরমার পুড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ একেবারে বন্ধ হয়ে পড়ে। তবে ব্যতিক্রম ছিল বাহুবল উপজেলা। যেখানে বিদ্যুৎ থাকলেও বাকি ৮টি উপজেলা বিদ্যুৎহীন ছিল।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছিল। দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ বন্ধ থাকে। তবে দুইবার কিছু সময়ের জন্য বিদ্যুৎ এলেও তা বেশিক্ষণ থাকেনি। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় একেবারেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যেই খবর চাওর হয় শাহজীবাজার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে আগুন ধরেছে। তখন থেকে বিদ্যুৎ পাওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন জেলার বাসিন্দারা। এর মাঝে শুরু হয় বৃষ্টি। সন্ধ্যা থেকে শহরে নিরবতা নেমে আসে। দোকানপাট বন্ধ হয়ে পড়ে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, দুপুর থেকেই বিদ্যুতের সার্কিট ব্রেকার, ফিউজে সমস্যা হচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ সন্ধ্যায় ট্রান্সফরমারে আগুন ধরে যায়। খবর পেয়ে শায়েস্তাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে দীর্ঘক্ষণ চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে ৩টি ট্রান্সফরমার পুড়ে গেছে। এতে জেলার ৮টি উপজেলা পুরোপুরি বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। বিদ্যুৎ না থাকার কারণে মানুষজন সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন পানি নিয়ে। বাসা বাড়িতে পানির তীব্র সংকট দেখা দেয়।
শাহজীবাজার পাওয়ার গ্রিডের সহকারী প্রকৌশলী তাফসির বিন বাশার জানান, শাহজীবাজার পাওয়ার গ্রিডে অগ্নিকাণ্ডের কারণে একটি সার্কিট ব্রেকার ও ৩টি ট্রান্সফরমার পুড়ে গেছে। এর মধ্যে একটির অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। ইতোমধ্যে ১টি মেরামত করে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আরও একটি সন্ধ্যার মধ্যে মেরামত করা সম্ভব হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। অপরটি যেহেতু বেশি খারাপ অবস্থায় তাই সেটি মেরামত করতে সময় লাগবে।
তিনি বলেন, এখনই নতুন ট্রান্সফরমার আনা সম্ভব নয়। কারণ এগুলো অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তাছাড়া এখানে টেন্ডার প্রক্রিয়ারও বিষয় রয়েছে। যা সময় সাপেক্ষ। তবে আমাদের সবসময় ব্যাকআপ ব্যবস্থা থাকে। আমরা যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।
হবিগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুর মোর্শেদ বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে। তবে মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে আপাতত ১ থেকে ২ ঘণ্টা পরপর একেক এলাকায় কিছু সময়ের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। আমরা অবিরাম চেষ্টা করছি যেন দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে পারি।