সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার লাউতা ইউনিয়নের টিকরপাড়ায় মৃত্যুর দুই মাস পর পিতৃ পরিচয় শনাক্তের জন্য দুইদিনের নবজাতকের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। এ ঘটনায় উপজেলা জুড়ে কৌতুহলের সৃষ্টি করে।
মঙ্গলবার সকাল ১১টায় সিলেটের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট তানজীর হোসাইন সজীব আদালতের নির্দেশে বিয়ানীবাজার ও জুড়ি থানা পুলিশের সহযোগিতায় কবর থেকে শিশুটির মরদেদ উত্তোলন করে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেন।
স্থানীয়রা জানান, বিয়ানীবাজারের লাউতা ইউনিয়নের টিকরপাড়া গ্রামের সিএনজি অটোরিকশা চালক জসিম উদ্দিন তাঁর মেয়ে মৌলভীবাজারের জুড়ি উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের এক বাড়িতে গৃহস্থালির কাজ করতেন। তিনি যেখানে কাজ করতেন সে এলাকার মাহিন আহমেদ নামে এক যুবক রাজমিস্ত্রীর কাজ করতো। সেই যুবকের সঙ্গে গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে জসিম উদ্দিনের মেয়ের। সেই সম্পর্কের ফলে গর্ভধারণ ও পরবর্তীতে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি ছেলে শিশুর জন্ম হয়। নবজাতক জন্মের দুইদিন পর মারা গেলেন উভয় পরিবারের সম্মতিতে বিয়ানীবাজারের টিকরপাড়ার স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। কিন্তু এ ঘটনার পর থেকেই মাহিন আহমেদ বাচ্চা ও তার মাকে অস্বীকার করে। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী নারী সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করলে আদালতের নির্দেশে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য শিশুটির মরদেহ উত্তোলন করে নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
ভুক্তভোগী মেয়ের বাবা জসিম উদ্দিন জানান, মেয়ের গর্ভে সন্তান এ খবর পেয়ে মেয়ের সাথে কথা বলে সে সময় জুড়ি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের। স্থানীয় সালিশ ব্যক্তিবর্গ ও অভিযুক্ত মাহিনের পরিবার সমঝোতায় প্রস্তাব দিলে মেয়ে তার অনাগত সন্তানের ভবিষ্যৎ বিবেচনা করে আপোষ করি।মেয়ের গর্ভের সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার দুইদিন পর মারা যায়। মরদেহ দাফনের পর থেকে স্ত্রী হিসাবে আমার মেয়েকে গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায় মাহিন ও তার পরিবার। কোন উপায় না পেয়ে আদালতের দ্বারস্থ্য হলে আদালত পিতৃপরিচয় শনাক্তে ডিএনও পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করার নির্দেশ দেন
জসিম উদ্দিন জানান, আমি একজন হতদরিদ্র। সিএনজি অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। আমি বিজ্ঞ আদালতের কাছে মেয়ের প্রাপ্য সম্মানটুকু ফেরত চাই।
লাশ উত্তোলন শেষে সিলেটের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট তানজীর হোসাইন সজীব জানান, আদালতের নির্দেশক্রমে দুই মাস আগে মারা যাওয়া দুইদিনের একজন নবজাতক শিশুর লাশ উত্তোলন করেছি। মূলত ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আমরা নমুনা সংগ্রহ করেছি।