সিলেটের বিশ্বনাথের বহুল আলোচিত চাউলধনী হাওরপাড়ে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা মামলায় ৮ জনের মৃত্যুদন্ড ও ৭ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩য় আদালত এই রায় থোষণা করেন। আদালতের এপিপি কামাল হোসেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়াও, আরও ১৭ জন আসামীকে ২ বছর করে কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলায় মোট ৩২ আসামীর মধ্যে ১ জন পলাতক থাকলেও বাকি সকলেই কারাবন্দী।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন বহুল আলোচিত যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাইফুল আলম, নজরুল, সদরুল, সিরাজ, জামাল, শাহিন, জলিল ও আনোয়ার।
যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন ইলিয়াছ, আব্দুন নুর, জয়নাল, আশিক, আছকির, ফরিদ ও আকবর।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১ মে বিশ্বনাথের চৈতননগর গ্রামের নজির উদ্দিনের ক্ষেতের জমি থেকে জোর করে পাশর্^বর্তী সড়কে মাটি তুলতে যান যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাইফুল আলম। এ সময় তাকে বাধা দেন একই গ্রামের নজির উদ্দিন, তাঁর চাচাতো ভাই মানিক মিয়া ও ভাতিজা ১০ম শ্রেণির ছাত্র সুমেল মিয়া। শুরু হয় বাগবিতন্ডা। এক পর্যায়ে গুলি চালান সাইফুল। তাঁর গুলিতে সুমেল নিহত হন এবং গুলিবিদ্ধ হন সুমেলের পিতা ও চাচাসহ ৪ জন।
ঘটনার পর সুমেলের চাচা ইব্রাহিম আলী সিজিল বাদী হয়ে ২৭ জনের নামে বিশ^নাথ থানায় হত্যা মামলা (নাম্বার ৪, তারিখ ০৩/০৫/২১ইং) দায়ের করেন। বিশ্বনাথ থানার তৎকালিন পরিদর্শক (তদন্ত) রমাপ্রসাদ চক্রবর্তী দীর্ঘ তদন্ত শেষে ৩২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। মামলায় ২৩ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেন।
গত ১৩ জুলাই মামলাটির যুক্তিতর্ক শেষে ৩০ জুলাই রায় ঘোষণার দিন ধার্য করা হয়। ওইদিন আদালত ৩০ আসামীকে কারাগারে প্রেরণ করেন। মামলার ৩২ আসামির মধ্যে এজাহার নামীয় আসামী মামুনুর রশীদ পলাতক রয়েছেন এবং প্রধান আসামি সাইফুল আলম প্রায় পৌনে ৪ বছর ধরে কারাগারে রয়েছেন।
এদিকে, মামলার রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বাদী ইব্রাহিম আলী সিজিল। তিনি আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জানিয়ে বলেন, ‘এই রায় যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়’।