সুনামগঞ্জ শহরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসককে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করার অভিযোগে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রায়হান উদ্দিনের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল দলীয় পদ স্থগিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) রাতে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক (যুগ্ম-সম্পাদক পদমর্যাদা) আব্দুল্লাহ আল মামুন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক রায়হান উদ্দিনের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের দলীয় পদ স্থগিত করা হলো। এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় সভাপতি এস.এম জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকাল ৪টায় সুনামগঞ্জ শহরের হাছাননগর এলাকায় আনিসা হেলথকেয়ার অ্যান্ড ডায়গনস্টিক সেন্টারে হামলার ঘটনায় এই সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
ঘটনার পর আহত চিকিৎসক গোলাম রব্বানী সোহাগকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার মাথা ও পিঠে একাধিক ছুরিকাঘাত রয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক।
তবে এর আগে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রায়হান উদ্দিন আনিসা হেলথকেয়ারের আলট্রাসনোগ্রাফির দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকের হামলায় নিজে আহত হওয়ার অভিযোগ এনে ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্ট দেন।
পরে রাতে ফেসবুকে আরেকটি ভিডিও বার্তায় রায়হান উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, তার স্ত্রীর আলট্রাসনোগ্রাম করতে এসে দুই থেকে আড়াই ঘন্টা অপেক্ষার পর আলট্রাসনোগ্রাফির দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকের রুমে প্রবেশ করেন। অভিযোগ করে বলেন, আমাদের অনেক পরে এসেও অনেকে আলট্রাসনোগ্রাম করছেন। এ নিয়ে চিকিৎসকের সাথে তর্ক বেধে যাওয়ার এক পর্যায়ে রায়হান উদ্দিনের স্ত্রীকে গালমন্দ করাসহ শরীরে ধাক্কা মারেন চিকিৎসক। পরে এ ঘটনার কারণ জানতে চাইলে রায়হান উদ্দিনকেও কলম দিয়ে শরীরে আঘাত করেন ওই চিকিৎসক।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে অভিযুক্ত রায়হান উদ্দিন তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে আলট্রাসনোগ্রাম করাতে আনিসা হেলথকেয়ারে নিয়ে আসেন। রোগীর সিরিয়াল নিয়ে চিকিৎসক গোলাম রব্বানী সোহাগ অসম্মতি জানান। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। পরে ক্লিনিকের মালিক পক্ষের হস্তক্ষেপে বিষয়টি মিমাংসা হয় এবং রায়হানের স্ত্রীকে আলট্রাসনোগ্রাম করিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
ক্লিনিকের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, বিকেল ৪টা ৩ মিনিটের দিকে রায়হান উদ্দিন ছাত্রদল নেতা শাহনেওয়াজ মুবিনকে সঙ্গে নিয়ে আলট্রাসনোগ্রাম কক্ষের দিকে যান। এর কিছুক্ষণ পরেই অপেক্ষারত রোগী ও তাঁদের স্বজনদের দৌড়ে কক্ষ থেকে বের হতে দেখা যায়।