সিলেটের গোয়াইনঘাটে কমিউনিউটি পুলিশিংয়ের ২৯ অক্টোবর ঘোষিত কমিটি স্থগিত করা হয়েছে। বিতর্কের মুখে এই কমিটি স্থগিত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার তোফায়েল আহমদ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২৯ অক্টোবর ঘোষিত কমিটিতে এলাকার বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে উপেক্ষা করে মনগড়া একটি কমিটি গঠন করা হয়। তড়িগড়ি করে গড়া এই কমিটি নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক দেখা দেয়। কমিটিতে উপযুক্ত ব্যক্তিবর্গকে সদস্য না করায় সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ দেখা দেয়। এরই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) পুলিশ প্রশাসন বিতর্কিত এই কমিটি স্থগিত ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য যে, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিনকে সভাপতি ও গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাব সভাপতি, ‘জামায়াত নেতা’ মঞ্জুর আহমদকে সাধারণ সম্পাদক করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ঘোষণার পর থেকেই এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হন বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ। কমিটি প্রত্যাখান করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত তারা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কমিটি স্থগিত করা হয়।
জানা যায়, স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে কমিটিতে গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাবের সভাপতি ও ‘জামায়াত নেতা’ মঞ্জুর আহমদ, সাবেক সভাপতি এমএম মতিন, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক করিম মাহমুদ লিমনের স্ত্রী সুমায়াইয়া করিম সুমিকে পদায়ন করা হয়। গোয়াইনঘাট উপজেলায় সাংবাদিকদের ৩টি সংগঠন থাকলেও একটি সংগঠনের সভাপতি, সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্ত্রীকে কমিটিতে স্থান দেওয়ায় এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তাছাড়া বঞ্চিত অন্য দুটি সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এর তীব্র প্রদিবাদ ও নিন্দা জ্ঞাপন করেন। কমিটিতে মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোর কোনও নেতাকর্মীকে অর্ন্তভ‚ক্ত করা হয়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে।
গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রেসক্লাব’র আহ্বায়ক মো. ইসলাম আলী বলেন, ২৪’র ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূাত্থান হয়েছিল বৈষ্যম্যের কারণে। আমাদের উপজেলায় ৩টি সাংবাদিক সংগঠন রয়েছে কিন্তু একটি সংগঠনের ৩ জনকে কমিটিতে রাখা হয়েছে এবং একজনের স্ত্রীকে রাখা হয়েছে কিন্তু অন্য দুই সংগঠনের কাউকে এখানে রাখা হয়নি। এটি ষ্পট বৈষম্য। কমিটি স্থগিত করায় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা জামায়াতের আমীর মাস্টার আবুল হোসেন জানান, কমিটিতে আমি ৭ জনের নাম প্রস্তাব করেছিলাম কিন্তু সবাইকে বাদ দিয়ে আমাকে সদস্য করা হয়েছে। আমি এর প্রতিবাদ জানিয়েছি। প্রশাসন কমিটি স্থগিত করেছে। আমরা চাই বৈষ্যম্যমুক্ত একটি কমিটি ঘোষণা করা হোক।
তিন আরো বলেন, মঞ্জুর আহমদ জামায়াতের একজন সমর্থক মাত্র, তিনি জামায়াতের দায়িত্বশীল কেউ নন। তাছাড়া এই কমিটিতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার তোফায়েল আহমদ বলেন, আমি যোগদানের পরপরই ২ অক্টোবর তৎকালীন সেকেন্ড অফিসার এসআই আজিজ কমিনিউটি পুলিশিংয়ের উপজেলা কমিটি গঠন করে আমায় স্বাক্ষর নেন, তখন আমি নতুন ছিলাম এবং অনেককে চিনতাম না। না জেনে স্বাক্ষর দিয়েছি। তবে এই কমিটি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ায় ঊধ্বর্তন কৃর্তপক্ষকে অবহিত করার পর তা স্থগিত করা হয়েছে।