বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫
বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
সিলেট বিভাগ

চা শ্রমিকদের বরাদ্দের টাকায় বড় ধরনের অনিয়ম!

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় ‘চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় ৭ হাজার শ্রমিকের মাঝে জনপ্রতি ৬ হাজার টাকা করে বিতরণ করা হয়েছে বিকাশের মাধ্যমে। কিন্তু এ অর্থ বিতরণে বড় ধরনের অনিয়ম, পক্ষপাত ও আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

চা বাগানের সাধারণ শ্রমিকরা অভিযোগ করেছেন, প্রকৃত উপকারভোগীরা টাকা না পেলেও, অনেক ক্ষেত্রে একই পরিবারের একাধিক সদস্য—স্বামী, স্ত্রী, সন্তান, এমনকি ভাই-বোনও—তালিকাভুক্ত হয়ে টাকা পেয়েছেন। কোথাও কোথাও শ্রমিকদের ভোটার আইডি ব্যবহার করে অন্যের বিকাশ নম্বরে টাকা পৌঁছে গেছে। কেউ আবার টাকা তুলে শ্রমিককে অংশ দিয়ে বাকি টাকা নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শ্রমিক গোপাল গোয়ালা, রিশু বাগতি, বাবুল রেলীসহ অনেকেই বলেন, কিছু অসাধু পঞ্চায়েত নেতা ও বাগান কমিটির সদস্য নিজেদের আত্মীয়-স্বজনের নাম দিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এই অভিযোগে শ্রমিকরা রোববার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন।

একই অভিযোগে শমশেরনগর চা বাগানের নারী শ্রমিক সবিতা রেলী থানায় অভিযোগ করেছেন, পঞ্চায়েত নেতা শ্রীকান্ত কানু ও তার ঘনিষ্ঠরা দুর্নীতির মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

শ্রমিক শিমুল লোহার জানান, অন্য একজনের নামে তার বিকাশ নম্বরে টাকা আসে। পরে ওই ব্যক্তি টাকা তুলে তাকে মাত্র ২ হাজার টাকা দেয়। শ্রমিক ছবি লোহার বলেন, তার নামে ৬ হাজার টাকা গেলেও তা যায় নির্মল ছত্রির বিকাশে। পরে ৪ হাজার টাকা ফেরত পান তিনি।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, শমশেরনগর বাগান পঞ্চায়েত সম্পাদক শ্রীকান্ত কানু তার স্ত্রী, ভাই, বোন, ভাতিজাসহ একাধিক আত্মীয়ের নাম তালিকাভুক্ত করেছেন। একইভাবে শ্রমিক নেতা নির্মল দাস পাইনকা, তার স্ত্রী, কন্যা, ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রীর নামও তালিকায় পাওয়া গেছে।

জবাবে শ্রীকান্ত কানু বলেন, “তালিকা যেভাবে দেয়া হয়েছে, সেভাবেই টাকা গেছে। আমার পরিবারের কয়েকজন পেয়েছে, কিন্তু তারা আলাদা পরিবার।”

অন্যদিকে নির্মল দাস পাইনকা জানান, তিনি অসুস্থ থাকায় তার পরিবারের তথ্য দেওয়া হয়েছিল এবং বিষয়টি নিয়ে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।

কমলগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা অফিসার ইউসুফ মিয়া বলেন, “এ ধরনের অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সূত্রধর বলেন, “কিছু অভিযোগ আমরা পেয়েছি। আগেই সতর্ক করা হয়েছিল। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

এই সম্পর্কিত আরো