সিঙ্গারা আর পেয়াজু, এই দুই জনপ্রিয় ভাজা খাবার পছন্দ করেনা এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যায়।
এমনই মুখরোচক খাবার সিংগারা পেয়াজু বিক্রি করে মাসে অর্ধলক্ষ টাকা আয় করছেন ফেকুল মাহমুদপুর গ্রামের এক ব্যবসায়ী কামাল মিয়া। আর এ আয় হচ্ছে কোন শহরে নয়, সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার জামালগঞ্জ সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ও রিভার ভিউ পার্কের পাশে।
জামালগঞ্জ বাজারে সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে কামাল মিয়ার দোকানে সিঙ্গারা আর পেয়াজু বিক্রি। প্রতিদিন তার বিক্রি হয় ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা। সব খরচ বাদ দিয়ে মাসে তার আয় হয় ৫০ হাজার টাকা।
মো: কামাল মিয়া (৫০) উপজেলার ভীমখালী ইউনিয়নের ফেকুল মাহমুদপুর গ্রামে। পরিবারের অভাব অনটনের কারনে তিনি ৮ম শ্রেনী পর্যন্ত পড়াশোনা করতে পেরেছিলেন।
২০২২ সালে জীবিকার সন্দানে কারেন্টের বাজার সিঙ্গারা-পেয়াজু বিক্রি করতেন। সেখানে দোকানে ভালো বিক্রি না হওয়ায় চলে আসেন জামালগঞ্জে। সেখানে দোকান ভাড়া কারেন্টবিল সহ ১৪ হাজার এবং বাসা ভাড়া আরো ছয় হাজার টাকায় ভাড়া নিয়ে শুরু করেন সিঙ্গারা পেয়াজুর ব্যবসা। তার জীবনে অভাবনীয় পরিবর্তন এনে দিয়েছে এই ব্যবসা।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় সারাদিনই ক্রেতাদের ভীড় লেগেই থাকে। কেউ বেঞ্চে বসে খাচ্ছেন আবার কেউ দাড়িয়ে খাবার কেউ পেকেটে করে নিয়ে যাচ্ছেন পরিবারের জন্য। স্থানীয়রা জানান কামালের দোকানের কোন ভেজাল নেই। প্রতিদিনের খাবার প্রতিদিনই বিক্রি হয়। তার সিঙ্গারায় পেয়াজু কেবল সু-স্বাধু নয় স্বাস্থ্য সম্মতও।
তেলিয়া থেকে আসা এক ক্রেতা মামুন বলেন আমি কাজ শেষে প্রতিদিনই এখানে সিঙ্গারা ক্ষেতে আসি। কামালের মতো সিঙ্গারা আর কেউ বানাতে পারেনা।
জামালগঞ্জ সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সায়েম আহমেদ বলেন আমি প্রতিদিন স্কুলের হাফ টাইমে এখানে এসে সিঙ্গারা খাই। প্রতিপিছ ১০ টাকা। একটা সিঙ্গারা খেলে পেট ভরে যায়। এই দোকানের সিঙ্গারা অনেক সু-স্বাধু এবং রুচী সম্মত। হাফ টাইমে শত শত ছেলেরা এই দোকানে সিঙ্গারা পিয়াজু খায়।
কামাল মিয়া জানায় আগে কারেন্টের বাজারে দোকানে বেশী বিক্রি হতোনা। যা আয় হতো তা দিয়ে সংসার চালানো কষ্টকর ছিল। এখন সিঙ্গারা পেয়াজু বিক্রি করে ভালোই লাভ হচ্ছে। লাভের অংশ দিয়ে এক ছেলেকে জামালগঞ্জ সরকারি ডিগ্রী কলেজে পরাচ্ছি। আর এক ছেলে দোকানে আমার সাথে কাজ করে। মেয়েকেও লেখাপড়া শিখিয়ে বিয়ে দিয়ে দিয়েছি। আল্লাহর রহমাতে এই ব্যবসা আমাকে সফলতা এনে দিয়েছে। তিনি আরো বলেন দোকান বাসা ভাড়ায় আসে মাসে প্রায় ২০ হাজার টাকা। তার পরেও মাসে আয় ৫০ হাজার টাকার উপরে থাকে। এতেই আমি খুশী।
জামালগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মো: মুজিবুর রহমান জানান, কামাল মিয়ার দোকানে স্কুলের শিক্ষার্থী ও পার্কে আসা দর্শনার্থীদের ভীর লেগেই থাকে তার দোকানে সিঙ্গারা- পিয়াজু ছানা ভরা খুবই সুস্বাধু। আমি তার ব্যবসার সর্বাঙ্গীন মঙ্গল ও উন্নতি কামনা করি।