নবীগঞ্জে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনায় আরেকটি হত্যা মামলা নবীগঞ্জ থানায় গতকাল শুক্রবার রাতে রুজু হয়েছে। উক্ত মামলায় ৫জন সাংবাদিকসহ ১৮৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।
৭ জুলাই নবীগঞ্জ উপজেলার তিমিরপুর ও আনমনু গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। উক্ত সংঘর্ষে শতাধিক লোক আহত, ২জন নিহত ও ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট অগ্নি সংযোগ করা হয়। এঘটনায় এর পূর্বে তিনটি মামলা হয়।
একটি হত্যা মামলা, একটি পুলিশ এসল্ট মামলা অপরটি হাসপাতাল ভাংচুরে অভিযোগে নবীগঞ্জ থানায় তিনটি মামলা রের্কড করা হয়। উক্ত মামলা গুলোতে ১০,হাজার মানুষকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। গত বৃহস্পতিবার রিমন হত্যার অভিযোগে ৫ সাংবাদিকসহ ১৯১ জনের বিরুদ্ধে নবীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। উক্ত এজাহারের আসামি তালিকা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। ফলে উক্ত তালিকার মধ্যে কয়েক জনের নাম একাধিক বার,২ জন প্রবাসীর নাম থাকায় যাচাই বাছাই করে উক্ত তালিকা থেকে ৭ জনের নাম বাদী প্রত্যাহার করেন ।
গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৩টায় ১৮৪ জনের নামে মামলা রেকর্ড করা হয়। উক্ত মামলায় আরও ৩০০০ গং আসামি রাখা হয়েছে।
মামলাটি দায়ের করেন নিহত রিমন মিয়ার ছোট ভাই রাজন আহমদ বিধু। উক্ত মামলায় আসামি ৫ সাংবাদিক হলেন, দৈনিক মানবজমিনের সাংবাদিক এম,এ বাছিত, নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ছনি আহমদ চৌধুরী, দৈনিক হবিগঞ্জ সময় পত্রিকার সম্পাদক মোঃ আলা উদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক সেলিম মিয়া তালুকদার, দৈনিক হবিগঞ্জ সময় পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার জাবেদ ইকবাল তালুকদার।
মামলা সূত্রে জানাযায়, সাংবাদিক আশাহিদ আলী আশা ও সেলিম তালুকদার উভয় পেশায় সাংবাদিক। তাহাদের পেশাগত দায়িত্বর বাহিরে একে অপরকে হেয় প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যে সাক্ষী আশাহিদ আলী আশা ও আসামী সেলিম তালুকদার তাহাদের নিজস্ব ফেইসবুক ওয়ালে একে অপরকে কুটক্তি ও দোষারূপ করে বিভিন্ন পোষ্ট করেন। এই পোষ্টকে কেন্দ্র করে আসামী সেলিম তালুকদার তার লোকজন সহ সাক্ষী আশাহিদ আলী আশা-কে নবীগঞ্জ নতুন বাজারস্থা লতিফ সুপার মার্কেটের সামনে অতর্কিত হামলা করে মারধর করে । মারধর করে চলে যাওয়ার সময় স্থাানীয় বাজারের লোকজন হামলাকারী ২ জন ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন।
আসামী সেলিম তালুকদারের পক্ষের ২জন লোককে আটক করিয়া পুলিশে সোর্পনের কারণে আক্রোশান্বিত হইয়া পরবর্তীতে সেলিম তালুকদারের নেতৃত্বে পূর্ব-পশ্চিম তিমিরপুর ও চরগাও গ্রামের লোকজন একত্রে সঙ্গবদ্ধ হইয়া নবীগঞ্জ নতুন বাজারস্থা লতিফ সুপার মার্কেটের সামনে আসিয়া ইট পাটকেল নিক্ষেপ করিয়া মার্কেটের ভাংচুর করিয়া ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে। পূর্ব তিমিরপুর, পশ্চিম তিমিরপুর, চরগাঁও এবং আনমন গ্রামের লোকজনের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে। ঘটনার তারিখ ৭ জুলাই বেলা অনুমান সকাল ১১.৩০ ঘটিকার সময় পূর্ব ও পশ্চিম তিমিরপুর, চরগাঁও সহ আশপাশের লোকজনদেরকে নিয়ে ১নং আসামী আলা উদ্দিনের নেতৃত্বে মিটিং-এ মিলিত হয়।
অপরদিকে আনমনু গ্রামের লোকজন ও একত্রে মিলিত হইয়া মিটিং করে। এদিন দুই ঘটিকার আসামী আলা উদ্দিনের নেতৃত্বে আনমনু গ্রামে অগ্নিসংযোগ লুটপাট, ভাংচুর খুনের জখমের উদ্দেশ্যে হামলা করে অজ্ঞাতনামা প্রায় ২৫০০/৩০০০জন লোক মিছিল সহকারে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র রামদা, দা সুলফি, টেটা, কিরিস, বরত, ডেগার ককটেল ইট-পাটকেল সহ মারাত্মক ভাবে হামলা করে অসংখ্য মানুষকে আহত করে । এ সময় আনমন গ্রামের প্রবেশ পথে উল্লেখিত আসামীগণ সহ অজ্ঞাতনামা আসামী বাজারে ভাংচুর চালায়।
নবীগঞ্জ থানার ওসি শেখ কামরুজ্জামান বলেন, রিমন হত্যার অভিযোগে গতকাল শুক্রবার রাতে ১৮৪ জনের নামে নবীগঞ্জ থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। মামলার আসামি গ্রেফতারের জন্য চেষ্টা চলছে।