মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় বৃদ্ধ ময়ুর মিয়া (৬০) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত মূল অভিযুক্ত রিপন দেবনাথকে (৪০) গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যায় ব্যবহৃত চাকু ও নিহতের মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করা হয়েছে।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের বড়চেগ গ্রামের বাসিন্দা ময়ুর মিয়ার সঙ্গে একই এলাকার রিপন দেবনাথের সুদের টাকা লেনদেন নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল।
রিপনের দাবি, তিনি সুদের টাকা পরিশোধ করলেও ময়ুর মিয়া চুক্তিনামা বা স্ট্যাম্প ফেরত দিচ্ছিলেন না, যা নিয়ে তার মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ১১ জুলাই রাতে দেওড়াছড়া চা বাগান থেকে একসঙ্গে বাড়ি ফেরার পথে স্ট্যাম্প ফেরতের বিষয় নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে রিপন দেবনাথ ময়ুর মিয়াকে বাবনবিল ছড়ার পাশে নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে প্রথমে কিল-ঘুষি মারেন এবং পরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। মৃত্যু নিশ্চিত করতে তিনি ধারালো চাকু দিয়ে ময়ুর মিয়ার শরীরে একাধিকবার আঘাত করে পালিয়ে যান।
হত্যাকাণ্ডের পর প্রমাণ লোপাটের উদ্দেশ্যে রিপন তার ব্যবহৃত চাকুটি পার্শ্ববর্তী এক প্রতিবেশীর বাড়ির শৌচাগারে ফেলে দেন এবং নিহত ময়ুর মিয়ার মোবাইল ফোন ও সিমকার্ড ভেঙে হামিদিয়া চা বাগানে ফেলে রাখেন।
এর আগে, ১১ জুলাই রাতে বাবনবিল ছড়া থেকে স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ ময়ুর মিয়ার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে। পরদিন নিহতের মেয়ে হালিমা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে কমলগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) রাতে মুন্সীবাজার এলাকা থেকে রিপন দেবনাথকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রিপন হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন এবং তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হামিদিয়া চা বাগান এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডের বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করা হয়।