ঘটনাবহুল ২০২৪ সালে সিলেট ঘটে গেছে বহু আলোচিত-সমালোচিত ঘটনা। এসব ঘটনার মধ্যে একটি হচ্ছে সীমান্তে রেকর্ড পরিমাণ চোরাই পণ্য জব্দ। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে সিলেট সীমান্ত দিয়ে চিনি সহ বিভিন্ন ভারতীয় চোরাই পণ্য অবাধে নিয়ে আসলেও তা ধরা ছোয়ার বাহিরে ছিলো। মাঝে মধ্যে সামান্য চোরাই পণ্য জব্দ করা হলেও বিশেষ করে পাঁচ আগস্টের পর সিলেট সীমান্তে বেড়েছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তৎপরাতা। প্রায় প্রতিদিনই সীমান্তের বিভিন্ন এলাকা থেকে গড়ে কোটি টাকার চোরাই পণ্য জব্দ করা হচ্ছে। সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরের তথ্য মতে এ বছর সীমান্তে প্রায় দেড়শ কোটি টাকার পণ্য জব্দ করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে অন্তত ৩০ জন জনকে। জব্দ করা বেশিরভাগ পন্যই পাঁচ আগস্টের সরকার পতনের পর।
৫ আগস্ট ক্ষমতার পালাবদলের পর পর সারা দেশের ঢিলেঢালা নিরাপত্তার সুযোগ নিয়ে তৎপর হয়ে ওঠে চোরাকারবারীরা। বিভাগের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে চোরাই পথে পণ্য আনার হিরিক পরে। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে, শাড়ি, থান কাপড়, রিপিটার, ডুপ্লেক্স, রেডিও সেট, কম্বল, ক্রিম, জিরা, চিনি, ওষুধ, আপেল, কমলা ও বিভিন্ন প্রকার প্রসাধনী আইটেম, রসুন। এছড়া রয়েছে রিপিটার, ডুপ্লেক্স, রেডিও। তবে চোরাচালান বন্ধে সিলেটের সীমান্তজুড়ে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তাব্যবস্থা। সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) প্রতিদিনই সীমান্তের বিভিন্ন এলাকা থেকে গড়ে কোটি টাকার চোরাই পণ্য জব্দ করছে। ধরা পড়ছে চোরাকারবারি ও সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে যাতায়াতকারীরা।
বিজিবির এতো অভিযানের পরও থামছে না চোরাকারবারিদের তৎপরতা। বরং সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সতর্ক নজরদারির কারণে চোরাকারবারীরা পাল্টেছে কৌশল। ট্রাকভর্তি বালু বা পাথরের নিচে পণ্য রেখে চোরাকারবারিরা তাদের গন্তব্যযাত্রা নির্বিঘ্ন করার চেষ্টা করছে।
জানা গেছে, সিলেটের গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট ও বিয়ানীবাজারের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা এবং সুনামগঞ্জের কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে এসব চোরাই পণ্য আসে। এসব ঘটনায় মাঝে মধ্যে ধরা পড়ছে চোরাকারবারীরা। তবে সচেতন মহলের মন্তব্য- এসব চোরাকারবারের মূল হোতাদের আইনের আওতায় না আসা পর্যন্ত এই অপরাধ থামবে না। কারণ- মূল হোতারা ধরা না পড়ায় একের পর এক চোরাই পণ্যের চালান ভারত থেকে নিয়ে আসছেন। মাঝে-মধ্যে তাদের দু-একটি চালান ধরা পড়লেও পরবর্তী দু-এক চালানে তারা সে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারছেন।
বিজিবি সিলেট ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সাইফ জানান, সিলেট সীমান্তে চোরাচালান বন্ধে তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। তবে চোরাকারবারিরা প্রতিবার তাদের রুট পরিবর্তন করছে। সীমান্ত সুরক্ষায় বিজিবির অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গোয়েন্দা তৎপরতাসহ এর সাথে জরিতদের প্রায়ই আটক করা হয়েছে। সীমান্তে নিরাপত্তা রক্ষা ও চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবি'র আভিযানিক কার্যক্রম ও গোয়েন্দা তৎপরতা সর্বোতভাবে অব্যাহত থাকবে।