হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের গজনাইপুর গ্রামে পুলিশের ওপর হামলার মামলায় আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ রোববার সকালে দক্ষিণ গজনাইপুর গ্রাম ও জনতার বাজার থেকে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) যৌথ অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে।
গ্রেফতার আসামিরা হলেন গজনাইপুর গ্রামের ইকবাল হোসেন, পিরোজপুর গ্রামের রোজেল মিয়া, দেওপাড়া গ্রামের কাইয়ুম মিয়া, রামলোহ গ্রামের সোহেল আহমেদ, আবির আহমেদ জয়, দেওপাড়া গ্রামের পংকজ দত্ত, পানিউমদা গ্রামের আল আমিন ও শতক গ্রামের সাদেক মিয়া।
৩১ মে জনতার বাজার পশুর হাটে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর হামলার ঘটনায় ১ জুন ৩৪ জনের বিরুদ্ধে নবীগঞ্জ থানায় মামলা করা হয়।
শনিবার ওই মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি দক্ষিণ গজনাইপুর গ্রামের নজর উদ্দিনকে গ্রেফতার করতে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে নবীগঞ্জ থানা ও গোপলার বাজার তদন্তকেন্দ্রের পুলিশ অভিযান চালায়। নজর উদ্দিনের বসতঘরে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তবে এ সময় অন্য আসামিরা গ্রামের মসজিদে ‘ডাকাত এসেছে’ বলে মাইকিং করেন।
এ সময় গ্রামের দুই শতাধিক লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা চালান এবং পুলিশের কাছ থেকে নজর উদ্দিনকে ছিনিয়ে নেন। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়া হয় এবং সংঘর্ষে পুলিশের একটি ভ্যান ও দুটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়। হামলায় পুলিশের তিন কনস্টেবল আহত হন।
পুলিশের ওপর হামলার এই ঘটনায় নবীগঞ্জ থানা-পুলিশ বাদী হয়ে ৩৭ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনকে আসামি করে নবীগঞ্জ থানায় মামলা করে।
আজ রোববার সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নবীগঞ্জ থানা-পুলিশ, বানিয়াচং সেনাক্যাম্পের একদল সেনাসদস্য ও র্যাব-৯-এর সদস্যরা যৌথভাবে উপজেলার দক্ষিণ গজনাইপুর গ্রামে ও জনতার বাজার এলাকায় অভিযান চালান। অভিযানে পুলিশের ওপর হামলা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি আব্বাস উদ্দিনের ছেলে ইকবাল হোসেনসহ ১৩ জনকে আটক করা হয়। পরে যাচাই-বাছাই শেষে এজাহারভুক্ত আসামি ইকবাল হোসেন, মামলার সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে আরও সাতজনসহ মোট আটজনকে পুলিশের ওপর হামলার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় এবং সংশ্লিষ্টতা না পেয়ে পাঁচজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. কামরুজ্জামান বলেন, পুলিশের ওপর হামলার মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় সেনাবাহিনী ও র্যাবের সহযোগিতায় অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত আসামিসহ আটজনকে গ্রেফতার করা হয়।
হবিগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার জহিরুল ইসলাম বলেন, পুলিশের ওপর হামলার মামলায় ১৩ জনকে আটক করা হয়েছিল। তথ্য যাচাই-বাছাই করে মামলার এজাহারভুক্ত একজন আসামিসহ আটজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।