কোনো মামলার আসামি না হয়েও জেল খাটছেন কাওছার। একটি ভুয়া গ্রেফতারী পরোয়ানায় আটক হয়ে গতো ১০ দিন ধরে জেল খাটছেন সাংবাদিক সেলিম আহমদ কাওছার (৩৫)।
গত ১৯ জুন দুপুরে নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার নিষ্পত্তি হওয়া একটি মামলার ভুয়া গ্রেফতারী পরোয়ানায় সিলেট মহানগরীর কদমতলীস্থ তাঁর নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৯ এর একটি দল তাকে আটক করে। আটকের পর তাকে গোলাপগঞ্জ থানায় সোপর্দ করা হয়। গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মোল্যা নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার মামলা নং-১৫, ধারা ৩০২/৩৪ দ.বি. এবং স্মারক নং-১৯৮/(৫/৩/ ২৫) আটক দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
তবে র্যাব সেলিম আহমদ কাওছারকে গোলাপগঞ্জ থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করলেও মামলার গ্রেফতারী পরোয়ানায় যাচাই-বাচাই না করেই ওসি মনিরুজ্জামান কাওসারকে আদালতে মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
থানা পুলিশের এমন গাফিলতির কারণে নির্দোষ সেলিম আহমদ কাওছার দীর্ঘদিন থেকে জেলের ঘানি টানছেন।
সেলিম আহমদ কাওছার গোলাপগঞ্জ উপজেলার রণখেলি গ্রামের মৃত আওলাদ হোসেনের ছেলে এবং দৈনিক সবুজ সিলেট পত্রিকার সাবেক স্টাফ রিপোর্টার।
উল্লেখ্য নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানায় প্রায় ১৫ বছর আগে একটি হত্যা মামলা (১৫(০৫)১০) দায়ের করেন নিলক্ষা দাড়িয়াগাঁওয়ের অফিজা খাতুন। মামলার প্রাথমিক অভিযোগ এবং পুলিশের দেওয়া চার্জশীটে আসামি হিসেবে নাম নেই সাংবাদিক সেলিম হাসান কাওছারের। মামলাটি ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই নরসিংদীর অতিরিক্ত দায়রা জজ ১ম বিচারক শামীমা পারভিনের আদালতে নিষ্পত্তি হয়। মামলার এজাহারভুক্ত ৫৩জন আসামীর সকলেই খালাস পান।
রায়পুরা থানার মুন্সি দেলোয়ার জানান, এই গ্রেফাতরি পরোয়ানা সম্পূর্ণ ভুয়া।
নরসিংদী আদালতের জিআর এবং রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুর রহমান জানান, এ গ্রেফতারি পরোয়ানা সম্পর্কে কিছুই জানেন না, এই গ্রেপ্তারী পরোয়ানা ভুয়া।
সিলেট গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মোল্যা বলেন, র্যাব ভুল করতে পারে না তাই যাচাই-বাচাইয়ের প্রয়োজন হয়নি। তাছাড়া আমরা যাচাই-বাছাই না করলে কি হবে আদালতে তাকে পাঠানোর পর আদালত যাচাই-বাছাই করলো না কেন। গ্রেফতারি পরোয়ানা ভুয়া হলে তাকে কীভাবে কারাগারে পাঠানো হলো। পরিবারের প্রশ্ন র্যাব এই ওয়ারেন্ট কোথায় পেল। কারা র্যাবের কাছে এই ভুয়া ওয়ারেন্ট প্রধান করে একজন নিরপরাধ মানুষকে গ্রেপ্তার করালো। বিষয়টি সঠিক তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
সাধারণত অন্য জেলা থেকে কোন ওয়ারেন্ট আসলে সংশ্লিষ্ট জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় হয়ে থানায় আসে এবং যাচাই-বাচাই পূর্বক ওয়ারেন্ট সঠিক হলে আসামি গ্রেপ্তারের বিধান রয়েছে। অথচ গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কোনপ্রকার যাচাই-বাচাই না করে এমনকি পুলিশের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ না করেই অতি উৎসাহি হয়ে অথবা কারো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সাংবাদিক কাওসারকে আটক দেখিয়ে কারাগারে প্রেরণ করেন।