সিলেটে এই বছরের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় সিলেট সরকারি কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে জাল প্রবেশপত্র তৈরি করে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার অভিযোগে শিক্ষার্থীকে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, সিলেট জেলা সিনিয়র সহকারী কমিশনার (রাজস্ব শাখা, জেলা ব্র্যান্ডিং ও পর্যটন সেল) মাহমুদ আশিক কবির।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সকালে সিলেট সরকারি কলেজের পরীক্ষার হলরুমে জাল প্রবেশপত্র নিয়ে পরীক্ষা দিতে গিয়ে ধরা পড়েন তিনি। আটককৃত ওই শিক্ষার্থী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা ও সিলেট মদন মোহন কলেজের শিক্ষার্থী তার নাম তাহমিনা আক্তার।
সূত্রে জানা যায়, পরীক্ষা শুরুর পর ক্লাসরুমের ভেতরে পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র যাচাই-বাছাইয়ের সময় দুই ছাত্রীর হাতে নাম ও ছবি পরিবর্তিত থাকলেও একই নম্বরের প্রবেশপত্র দেখতে পান সংশ্লিষ্টরা। দুজনই সিলেটের মদন মোহন কলেজের শিক্ষার্থী বলে পরিচয় দেন। পরবর্তীতে যাচাই-বাছাই করে মোছা. তাহমিনা আক্তার নামের ছাত্রীর প্রবেশপত্রটি জাল প্রমাণিত হয় এবং অন্যদিকে আসল প্রবেশ পত্র কার্ডধারী ফয়জিয়া আক্তারকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে ভূয়া কাগজ নিয়ে পরীক্ষা দিতে আসা তাহমিনাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষার ফি না দেওয়ায় তার বোন জামাই একজন দালালের মাধ্যমে টাকা জমা দেন এবং প্রবেশপত্র সংগ্রহ করেন। কিন্তু পরীক্ষার দিন কেন্দ্রে এসে জানতে পারেন, সেটি ভুয়া।’ তিনি বলেন, ‘আমি কিছুই জানতাম না। আমার বোন জামাই বিষয়টি করেছেন। সে বর্তমানে অসুস্থ এবং হাসপাতালে ভর্তি। এ সময় ভুয়া প্রবেশপত্রধারী ছাত্রীটি কান্নায় ভেঙে পড়েন।’
সিলেট সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এ জেড এম মাঈনুল হোসেন বলেন, ‘পরীক্ষাকেন্দ্রে দুইজন শিক্ষার্থী এক আসনে বসতে চাইলে তখন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকদের এবং সংশ্লিষ্টদের নজরে আসার পর যাচাই করে একজনের প্রবেশপত্র ভূয়া পাওয়া যায়। জাল কাগজপত্র তৈরি করে যে ছাত্রী পরীক্ষা দিতে আসেন এই বিষয়টি শিক্ষাবোর্ড ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে জানানো হলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের শাহপরান (রহ) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন বলেন, ‘জাল প্রবেশপত্র দিয়ে পরীক্ষা দিতে আসা এক শিক্ষার্থীকে আটক করে শাহপরাণ (রহ.) থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে ওই শিক্ষার্থী সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। পরে এখান থেকে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হবে।’
সিলেট জেলা সিনিয়র সহকারী কমিশনার (রাজস্ব শাখা, জেলা ব্র্যান্ডিং ও পর্যটন সেল) মাহমুদ আশিক কবির জানান, ‘জাল প্রবেশপত্র ব্যবহার করে পরীক্ষা দিতে আসা তাহমিনা নামের শিক্ষার্থীকে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।