বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫
বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
জকিগঞ্জে ইউএনও–এসিল্যান্ডসহ ৪ জনকে আদালতের শোকজ জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষরিত হবে ১৫ অক্টোবর জামালগঞ্জে ৩১ দফা বাস্তবায়নে মাহবুবুর রহমানের পক্ষে নারীদের উঠান বৈঠক খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় আজমল হোসেন চৌধুরীর উদ্যােগে দোয়া মাহফিল জুলাই সনদে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ থাকা বিষয়গুলোও বিবেচনায় নিতে হবে: আলী রীয়াজ ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের মন্তব্য ‘অপ্রত্যাশিত’: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সব কিছুরই শেষ আছে, আদালতে পলক জোর করে পদত্যাগ করানো শিক্ষকদের বেতন-ভাতা চালুর নির্দেশ নাহিদ ইসলামের বক্তব্য তাকেই পরিষ্কার করতে হবে, আমি কোনো এক্সিট খুঁজছি না: পরিবেশ উপদেষ্টা গুমের মামলায় অভিযোগ আমলে - শেখ হাসিনাসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
advertisement
সিলেট বিভাগ

জামালগঞ্জে দুই চাকায় ভর করে চলে অর্ধসহাস্রাধীক পরিবার

সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ ব্যস্ত রাস্তা। খানাখন্দে চলতে হয় আকাবাকা সরু গলি দিয়ে। লাখো মানুষের এই উপজেলায় এক দশক আগে এসেছে নতুন এক পেশা। তারা উপজেলার জেলা শহরের ছোট বড় রাস্তায় মোটর সাইকেল দুই চাকায় কাজে লাগিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে জীবন জীবিকা। 
তারা উপজেলার মোটর বাইক ড্রাইভার। তাদের গল্প উপজেলার অর্থনীতির সম্ভাবনা ও অনিশ্চয়তা উভয়ই রয়েছে তাদের জীবনে। 

মোহাম্মদ শামীম জানান দিনশুরু হয় সূর্য উঠার আগেই। প্রায় ২৫ বছর বয়সী এই তরুন কর্মী বাইক চালক। সে জানায় ভোর ৬টায় ঘুম থেকে উঠে সাড়ে ৬টায় রাস্তায়। সকালের যাত্রী নেওয়ার চেষ্টা করি। সারাদিন ৮শত থেকে হাজার টাকা রোজগার করি। পরিবারের জমির টাকায় সংসার চলেনা। আগে একটি সংস্থায় চাকুরী করতাম। প্রকল্প শেষ হওয়ায় এই পেশায় আসা। তবে দুই চাকা ব্যবহার করে তিনি পরিবারের খরচ মেটানোর চেষ্টা করছেন। ভাই-বোনের মধ্যে সে সবার বড়। পরিবারের দায়িত্ব এখন তার কাধেই। আক্ষেপ করে বলেন খরচের শেষ নেই। ভাইবোনদের লেখাপড়ার খরচ বাবার ঔষধ তার পর মটর সাইকেলের কিস্তি। 

উপজেলা জামালগঞ্জ, সাচনা বাজার, গজারিয়া, মন্নানঘাট, নোয়াগাও, রামনগর বাজার ঘুরে দেখা যায় প্রায় প্রতিটি ষ্টেন্ডে ১শত থেকে দেঢ়শত মটর বাইক। 

সাচনা বাজারের ড্রাইবার ইদ্রজিৎ রায় সহ অনেকেই পরিবারের খরচ চালানোর উপায় হিসাবে বেছে নিয়ে উপার্জনের দিকে ঝুকছে। এই আয়ে সংসার এবং নিজের প্রয়োজন মেটাচ্ছেন। অন্যান্য কাজের ফাকে ফাকে আবার অনেকে খন্ডকালীন মটর বাইক চালাচ্ছেন।

অনেকে দিনে সংসারের কাজ শেষে রাতে মটরবাইক চালিয়ে বাড়তি আয় করছেন। যেমন একজন মোঃ আরশ আলী (৫৫) তিনি কৃষি জমি চাষ করেন। দিনের বেশীর ভাগ সময়ই জমিতে কাজ করতে হয়। সন্ধার পর থেকে রাত ১টা পর্যন্ত মটর বাইক চালান। তিনি জানান মন্নানঘাট জামালগঞ্জ রাস্তার হওয়ায় পর থেকে তিনি এই রাস্তায় মটর বাইক চালান। সংসারের জামেলা ও কৃষি কাজের জন্য দিনে গাড়ী চালানো যায় না। তিনি প্রতিদিন গড়ে ৭ থেকে ৮শত টাকা রোজগার করেন। 

ড্রাইভার মাসুক বলেন সরকারী চাকরীর জন্য অনেক চেষ্টা করে না পাওয়ায় এখন মটর বাইক চালাই। বেকার থাকার চেয়ে একটা কাজে লেগে আছি। সংসারের অভাবে বাইক চালিয়ে সংসার ও নিজের ভাই বোনের লেখাপড়ার খরচ চালাই। বর্ষায় রোজী কম হয় প্রায়ই বৃষ্টি থাকে তাই যাত্রীরা সিএনজি যা অটোতে চলে যায়। আবার হেমন্তে যেখানে খুশী সেখানে যাওয়া যায়। বর্ষায় সাচনা সুনামগঞ্জ, জামালগঞ্জ ,গজারিয়া অথবা নোয়াগাও ছাড়া আর কোথাও যাওয়া যায়না। যার কারনে অনেক ড্রাইভারের আয় অনেক কমে যায়। যতদিন পর্যন্ত চাকরী পাবোনা ততদিন পর্যন্ত এই পেশায় জীবিকা চালিয়ে যাবো।

পরিবারের অর্থনীতির চাপ কমাতে আমাদের মতো তরুনদের অনেকেই পড়ালেখা ছেড়ে এই পেশায় বেছে নিয়েছে। মোঃ হাসেম বলেন নিজের পরিবারের জমিজমা থাকা সত্বেও মোটর বাইক চালাছেন। জমিজমা থেকে যা আয় হয় তাদিয়ে সংসার চলতে হিমশিম খেতে হয়। তাই কিস্তিতে মোটর বাইক কিনে চালাই। প্রতিদিন ৬ থেকে ৭শত টাকা রোজগারে সংসারের ঝামেলা অনেকটাই কাটিয়ে উটতে পেরেছেন তিনি।

২৫ বছর বয়সী দেবল দাস বলেন পরিবার তার উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হওয়ায় তাকে প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা আয় করতে হয়। পরিবারের অর্থনৈতিক দৈন্যতা দুর করতে এই পেশায় আশা। সে জানায় প্রতিদিন গড়ে হাজার টাকা আয় করি। ভাগ্য সহায না হলে ৫শত টাকাও আয় করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। কারন বর্ষাকালে রাস্তাঘাট কমে যাওয়ায় অল্প সংখ্যক রাস্তা শুকনো আছে তার মাঝে চালক অনেক বেশী।

তারা জানান তরুনদের মাঝে বেকারত্ব অনেক বেড়ে যাওয়ায় অনেকে আয়ের অর্থ হিসাবে এই পথ বেছে নিয়েছে। সে আরো জানায় হেমন্তে প্রতিমাসে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা অনেকেরই আয় হয়। বর্ষায় আয় করে ৭ থেকে ১০ হাজার টাকায় নেমে আসে। তার উপর ঝড় বৃষ্টি প্রচন্ড গরমে পুড়ে যাই শরীর, ক্লান্ত হয়ে পড়ে। এছাড়াও সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিনিয়তই বাড়ছে। গত কয়েক বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় ৬/৭ জন মৃত্যুবরন করেছে। তার ধারনা রাস্তায় সবচেয়ে বড় ভয় দুর্ঘটনা। সবাই বেপরোয়া ভাবে গাড়ী চালায় গতি ও ট্রাফিক আইন মেনে না চলার কারনে অনেকেই দুর্ঘটনার স্বীকার হয়।

এ ব্যাপারে বাইক সমিতির সভাপতি রিপন বলেন, এই উপজেলায় প্রায় ৫শত বেকার ছেলেরা মটর বাইক চালিয়ে পরিবারের খরচ চালায়। হেমন্ডে ও বর্ষায় জনগনের দ্রুততম চলাচলের জন্য মটর বাইকই অনেকের ভরসা। জীবনের ঝুকি নিয়ে যাত্রীদের সেবা করে যাচ্ছে মটর বাইক চালকরা। কিন্তু তাদের চিকিৎসা ও সরকারী সহায়তা কোন ব্যবস্থা নেই। কোন বাজারে মটর বাইক ষ্ট্যান্ড না থাকায় রাস্তায় মটর বাইক রাখতে হয়। সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি প্রতিটি বাজারে মটর বাইক ষ্ট্যান্ড সহ যাত্রী ছাউনী করে দেওয়ার জন্য। 

এই সম্পর্কিত আরো

জকিগঞ্জে ইউএনও–এসিল্যান্ডসহ ৪ জনকে আদালতের শোকজ

জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষরিত হবে ১৫ অক্টোবর

জামালগঞ্জে ৩১ দফা বাস্তবায়নে মাহবুবুর রহমানের পক্ষে নারীদের উঠান বৈঠক

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় আজমল হোসেন চৌধুরীর উদ্যােগে দোয়া মাহফিল

জুলাই সনদে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ থাকা বিষয়গুলোও বিবেচনায় নিতে হবে: আলী রীয়াজ

ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের মন্তব্য ‘অপ্রত্যাশিত’: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সব কিছুরই শেষ আছে, আদালতে পলক

জোর করে পদত্যাগ করানো শিক্ষকদের বেতন-ভাতা চালুর নির্দেশ

নাহিদ ইসলামের বক্তব্য তাকেই পরিষ্কার করতে হবে, আমি কোনো এক্সিট খুঁজছি না: পরিবেশ উপদেষ্টা

গুমের মামলায় অভিযোগ আমলে শেখ হাসিনাসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা