কানাইঘাটের লোভাছড়া কোয়ারির জব্দকৃত পাথর পরিহনকালে সুরমা নদী থেকে পাথরবোঝাই ৯টি স্টিলবডি নৌকা আটক করে পুলিশে দিয়েছে জনতা।
মঙ্গলবার গভীর রাতে দক্ষিণ সুরমার গোটাটিকরস্থ পাসপোর্ট অফিসের কাছে নৌকাগুলো আটক করা হয়। বিপুল পরিমাণ এই পাথর লোভাছড়া থেকে লুট করে পাচার করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ করেছেন নৌকা আটককারী লোকজন। জনতা কর্তৃক পাথরবোঝাই নৌকা আটক করে পুলিশে দেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) মো. সজিব খান।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার গভীর রাতে কানাইঘাটের লোভাছড়া থেকে সরকারি অভিযানে জব্দকৃত বিপুল পরিমাণ পাথর ৯টি নৌকায় করে সুরমা নদী দিয়ে পাচারের চেষ্টা করা হচ্ছিল। নৌকাগুলো দক্ষিণ সুরমার গোটাটিকরস্থ পাসপোর্ট অফিসের কাছে আসার পর স্থানীয় লোকজন আটক করেন। তারা নৌকাগুলো তীরে নোঙর করে থানাপুলিশকে খবর দেন। পরে মোগলাবাজার থানাপুলিশ গিয়ে পাথরসহ নৌকাগুলো জব্দ করে।
দক্ষিণ সুরমার গোটাটিকরের সামি এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী নজরুল ইসলাম জানান, ২০২০ সালের জুলাই মাসে লোভাছড়া কোয়ারি থেকে অবৈধভাবে উত্তোলন করে মজুদ করা প্রায় এক কোটি ঘনফুট পাথর জব্দ করে প্রশাসন। পাঁচ বছর পর খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি) ৫৬ লাখ ঘনফুট পাথর গোপন করে ৪৪ লাখ ঘনফুট পাথর নিলামের জন্য দরপত্র আহ্বান করে। এ ঘটনায় তিনি উচ্চ আদালতের ধারস্থ হন। অভিযোগ বিচারাধীন থাকাবস্থায় আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে বিএমডি সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে পিয়াস এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে জব্দকৃত ৪৪ লাখ ঘনফুট পাথর বিক্রি করে দেয়। এর বিরুদ্ধেও তিনি আদালতের ধারস্থ হয়েছেন।
নজরুল অভিযোগ করেন, বিএমডি ৪৪ লাখ ঘনফুট পাথর নিলাম করলেও মূলত বিক্রি করেছে ১ কোটি ঘনফুট পাথর। গোপন যোগসাজশে বিএমডি ৫৬ লাখ ঘনফুট সিন্ডিকেটের হাতে তুলে দিয়েছে। এর নেপথ্যে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাক আহমদ পলাশ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তমিজ উদ্দিন চেয়ারম্যান। এখন আদালতের নির্দেশ অমান্য করে তারা লোভাছড়ায় জব্দকৃত ১ কোটি ঘনফুট পাথর পাচারের চেষ্টা করছেন। মঙ্গলবার গভীর রাতে পাচারকালে ৯টি নৌকাবোঝাই পাথর আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে মোগলাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) ফয়সাল আহমদবলেন, গোটাটিকরের স্থানীয় লোকজন পাথরবোঝাই কয়েকটি নৌকা আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করেছেন। যারা পাথরবোঝাই নৌকা আটক করেছেন তারা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) মো. সজিব খান বলেন, সিলেটের কোয়ারিগুলোতে পাথর উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। সুরমা নদী থেকে পাথরবোঝাই কয়েকটি নৌকা আটক করে পুলিশে দিয়েছে জনতা। বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।