সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই বহিষ্কৃত যুবদল নেতা আবুল কাশেম ও জাহিদ খাঁন দ্বন্দ্বে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোন সময় ঘটতে পারে বহিষ্কৃত দুই নেতার কর্মীদের মধ্যে সংঘাত। মূলত আবুল কাশেম ও জাহিদ খানের মধ্যে জাফলংয়ে অবৈধভাবে বালি, পাথর ও চোরাচালানের আধিপত্য নিয়ে এই দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছে। যার জের ধরে এই দুই নেতাই এখন যুবদল থেকে বহিষ্কার হয়েছেন।
আবুল কাশেম সিলেট জেলা যুবদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তিনি সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী অনুসারী হিসেবে পরিচিত, অন্যদিকে জাহিদ খান গোয়াইনঘাট উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি সিলেট জেলা বিএনপি নেতা হাকিম চৌধুরীর অনুসারী বলে জানা গেছে।
জানা যায়, ৫ আগস্টের পর গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ে অবৈধভাবে বালি, পাথর উত্তোলন ও চোরাচালানের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনায় আসেন আবুল কাশেম ও জাহিদ খান। তাদের দুই জনরি বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী, অপহরণ, চোরাচালানের লাইন নিয়ন্ত্রণ, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনারসহ একাধিক অভিযোগ উঠে।
এরই জের ধরে আবুল কাশেমকে জাফলং এলাকায় অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন, লুট ও পরিবেশবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ২৭ এপ্রিল সেনাবাহিনীর গ্রেফতার করে। তবে ঈরে আগে তিনি জামিনে ছাড়া পান। পরে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় যুবদল। মূলত এখান থেকেই দ্বন্দ্বের সৃষ্টি। জাফলংয়ের আধিপত্য চলে যায় উপজেলা যুবদল নেতা জাহি খানের নিয়ন্ত্রণে। জাহিদ খান বহিষ্কৃত জেলা যুবদল নেতা কাশেমকে পাত্তা না দিয়ে জাফলং এলাকায় তার অনুগত বাহিনী দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছিলেন বালি, পাথার লুট, চাঁদাবাজি, চোরাচালানসহ বিভিন্ন অপকর্ম। আর তার এই কাজে প্রধান সহযোগি ছিলেন ছাত্রদল নেতা আজির উদ্দিন। জাহিরে কাছ থেকে ভাগবাটোয়ারা না পেয়ে চতুর আবুল কাশেম কীভাবে জাহি খনেকে শায়েস্তা করা যায় সেই দিকে মনোযোগ নে। একপর্যায়ে জাফলং পরিদর্শনে আসে দুই উপদেষ্টা। শ্রমিকদের নিয়ে তাদের গাড়ির অবরুদ্ধ করেন জাহি, আজিরসহ তারে অনুগত বাহিনী। এমন কর্মকাণ্ডে যুবদল নেতা জাহিকে বহিষ্কার করে কে›্র। আর তার অনুগত ছাত্রদল নেতা আজির উদ্দিনকে দেওয়া হয় কারণ দর্শনোর নোটিশ। তাছাড়া বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাি হয়ে গোয়াইনঘাট থানায় মামলা দায়ের করে। এতে প্রধান আসামি করা হয় যুবদল নেতা জাহি খানকে। এই ঘটনায় ৩ জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
তবে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন, যুবদল থেকে বহিষ্কৃত জাহিদ-কাশেমের চাঁদাবাজি ও আধিপত্যের দ্বন্দ্বে এলাকায় দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোনও সময় শান্ত জাফলংকে অশান্ত হয়ে উঠেতে পারে। তারা অভিলম্বে জাহি খান ও আবুল কাশেমকে গ্রেফতারের দাবি জানান।
শ্রমিক নেতা করম আলী জানান, জাহিদ ও কাশেম দেশের পট পরিবর্তনের পর দলীয় পরিচয় দিয়ে কোটি কোটি টাকার বালি পাথর লুটপাট ও চাঁদাবাজী করেছে। তারা এতো কিছু করার পর শান্ত হচ্ছে না। তারে দ্বন্দ্বের কারণে সাধারণ শ্রমিকদের পেঠে লাথি পড়েছে। এখন মামলা হয়েছে অজ্ঞাত নামাদের বিরুদ্ধে তাই অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গ্রেফতার এড়াচ্ছেন। এখনে তো কোন শ্রমিকের দোষ নেই সব দোষ এই দুই চাঁদাবাজের সিন্ডিকেটের। প্রশাসনকে বললো সাধারণ শ্রমিকরা শান্তি চায়, তাদের হয়রানী করবেন না। জাহি ও কাশেমকে আইনের আওতায় আনুন।
এ ব্যাপারে বহিষ্কৃত যুবদল নেতা আবুল কাশেমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।
সিলেট জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. মকসুদ আহমদ জানান, বহিষ্কৃত নেতারে কোনো ধরনের অপকর্মের দায়দায়িত্ব দল নেবে না। দলের ক্ষতি হয়, সমাজের ক্ষতি এমন কোনো কাজে যুবলের কোনও নেতকর্মী জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ও জেলা যুবদল ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমদ সরকারের মুটোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।