বানিয়াচংয়ে এবারও কোরবানি পশুর চামড়ার প্রত্যাশিত দাম না পাওয়ার অভিযোগ সাধারন মানুষের।
এদিকে ঈদুল আজহার কোরবানির চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বানিয়াচংয়ের মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা। সরকার নির্ধারিত দরের তুলনায় অনেক কম দামে বিক্রি করতে হয়েছে কাঁচা চামড়া। আবার অনেকেই চামড়া বিক্রি করতে না পেরে বাধ্য হয়ে অবশেষে স্থানীয় মাদ্রাসা ও এতিমখানায় দান করেছেন। কেউ কেউ আবার চামড়া মাটিতে ও পুঁতে রেখেছেন।এতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সমাজের দুস্থ ও অসহায় মানুষরা। চামড়া বিক্রি করে তারা যেটুকু সাহায্য পেতেন, সেটা এবার ও হাতছাড়া।
এবার রাজধানীর বাইরে লবন যুক্ত চামড়া প্রতি বর্গফুট ৫৫–৬০ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার।কিন্তু বানিয়াচংয়ে বাস্তব পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। মৌমুমী ব্যবসায়ীদের দাবি, অধিকাংশ লেনদেনই হয়েছে এর চেয়ে অনেক কম দামে।এজন্য মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যকে দায়ী করছেন তারা।
উপজেলা সূত্র জানায়,এ বছর কাঁচা চামড়া সংরক্ষনের জন্য ইসলামী ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বানিয়াচংয়ের ১০ টি মাদ্রাসায় বিনামুল্যে ২৪ মেট্রিক টন লবন বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে।
সরেজমিন বানিয়াচংয়ের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় প্রতিটি গরুর চামড়া আকারভেদে ১০০থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর খাসির চামড়া বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি ১০-২০ টাকায়। এতে হতাশ মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিগত কয়েক বছর ধরে ই চামড়ার দাম এমন ছিলো।এবার ও চামড়া সংগ্রহ গতবারের চেয়ে কম হবে বলেছেন কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীরা।
সদরের মাদারীটুলার বাসিন্দা মো:খালেদ মিয়া সবুজ সিলেট কে বলেন, এই বছর আগে থেকেই এক মাদ্রাসা কতৃপক্ষ থেকে চামড়া সংগ্রহের কথা বলে রেখেছেন।মাদ্রাসায় দান করে দিয়েছি।
সদরের দক্ষিন নন্দী পাড়ার বাসিন্দা মাহফুজ সানী বলেন, এলাকায় কোনো ক্রেতা আসেনি। কেবল দুই-একজন মাদ্রাসার প্রতিনিধি এসে চামড়া চেয়েছেন।আমরা মাদ্রাসায় দিয়ে দিয়েছি।
সদরের সাগর দিঘীর পশ্চিম পাড়ের বাসিন্দা মোজাম্মিল মিয়া জানান, কোনো ক্রেতা না আসায় চামড়া স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় দান করেছেন।
সদরের বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়,বিনা মূল্যে ও চামড়া নিতে আসেন নি কোন মৌসুমী ব্যবসায়ী।এতে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে লোকমান নামে একজন বলেন,এক জোড়া চামড়ার জুতা কিনতে লাগে দুই/তিন হাজার টাকা অথচ একটা গরুর চামড়ার দাম ১৫০/২০০ টাকা।
বানিয়াচংয়ের একাধিক মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, মধ্যস্বত্বভোগী সিন্ডিকেট, স্থানীয়ভাবে কাঁচা চামড়া সংরক্ষণের পর্য়াপ্ত সুযোগ না থাকার কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।ব্যবসায়ীরা বলছেন, পরিবেশ অধিদপ্তর শর্ত সহজ করে দিলে বানিয়াচংয়ে কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াকরণ শিল্প গড়ে তুলা সম্ভব।
বানিয়াচং উপজেলা প্রাণী সম্পদ ভেটেরিনারী সার্জন ডা:আবুল কাশেম বলেন,আমরা চামড়া সংরক্ষনের তথ্য সংগ্রহ করি ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে।চামড়া সংরক্ষনে স্থানীয় ভাবে কেউ ট্যানারী গড়ার উদ্দোগ নিলে প্রাণী সম্পদের পক্ষ থেকে পর্য়াপ্ত সহযোগীতার আশ্বাস ও দেন তিনি।