কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে সিলেট নগরীর পুলের মুখে জমে উঠেছে চামড়ার আড়ৎ। ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে মুখর হয়ে উঠেছে চারপাশ। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সিলেট জেলায় কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা এক লাখ দুই হাজারের মতো। এরমধ্যে প্রায় ৭০ হাজার গরুর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে ছাগলের চামড়া কেনার আগ্রহ নেই কারো, জানিয়েছে স্থানীয় ব্যবসায়ী মহল।
তবে এই উৎসবের মাঝেও চামড়া ব্যবসায়ীদের মুখে একরাশ উদ্বেগ আর অনিশ্চয়তা। কারণ, প্রতিবছরের মতো এবারও ন্যায্যমূল্য না পাওয়া, ট্যানারি মালিকদের বকেয়া, এবং সরকারি সমন্বয়হীনতার অভিযোগ উঠেছে খোদ ব্যবসায়ীদের কণ্ঠেই।
সিলেটের একজন চামড়া ব্যবসায়ী জানালেন, ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করে গরুর চামড়া কিনেছি। কিন্তু প্রতি বছর সরকার যে দাম নির্ধারণ করে দেয়, আমরা সেই দামে বিক্রি করতে পারি না। লবণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের খরচ তুলতেই হিমশিম খেতে হয়। গত কয়েক বছর ধরে লোকসান গুণেই টিকে আছি—জমিজমাও বিক্রি করতে হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, সিলেটে আগে ৪০০-৫০০ জন ব্যবসায়ী ছিলেন, এখন আছে মাত্র ৫০-৬০ জন। বাকিরা ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন। ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে এখনও গত ঈদের চামড়ার টাকা বকেয়া পড়ে আছে।
সরকারি সহযোগিতার অভাবের কথাও উঠে এসেছে। এক ব্যবসায়ী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “লবণ দেওয়া হয়েছে মাদ্রাসাগুলোতে, কিন্তু তারা জানেই না কিভাবে লবণ ব্যবহার করতে হয়। ব্যবসায়ীদেরকে কোনও লবণ দেওয়া হয়নি।”
চামড়ার বাজারে এই অনিশ্চয়তা নতুন নয়। প্রতি বছর ঈদে পশুর চামড়া সংগ্রহ করা হলেও ট্যানারিতে বিক্রির সময় দাম কমে যায় আশঙ্কাজনক হারে। চলতি বছর সরকার ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, আর ঢাকার বাইরে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। কিন্তু বাস্তবতায় এই দামে চামড়া বিক্রি সম্ভব হচ্ছে না বলে জানালেন ব্যবসায়ীরা।