গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংস্থ পিয়াইন নদীর কাটারি নামক স্থান থেকে স্থানীয় প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা থাকা ইসিএ ভুক্ত এলাকা থেকে অবৈধভাবে নৌকাযোগে বালু-পাথরের নৌকা থেকে চাঁদা উত্তোলনের সময় রহস্যজনকভাবে ‘নিখোঁজ’ হওয়া পাভেল মিয়ার (২২) লাশ অবশেষে ৭৪ ঘন্টা পর উদ্ধার করেছে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ।
তবে পাভেল মিয়ার লাশ উদ্ধার হলেও এখানো পর্যন্ত ‘ময়নাতদন্ত’ বা দাফন সম্পন্ন হয়নি। এদিকে পাভেলের লাশ উদ্ধারের পর তার পরিবার বিনা ময়নাতদন্তে দাফনের জন্য সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট আবেদন করেছেন। তবে এটি এখন ‘ঝুলে আছে’ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সিদ্ধান্তের উপর।
পাভেল আহমদ (২২) গোয়াইনঘাট উপজেলার ১১নং মধ্যে জাফলং ইউনিয়নের বাউরভাগ গ্রামের মহরম আলীর ছেলে।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও থানা পুলিশ জানিয়েছে, গোয়াইনঘাট উপজেলার পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের বাউরবাগের মহরম আলীর ছেলে পাভেল দীর্ঘদিন ধরে জাফলং এলাকায় গভীর রাতে তাঁর সঙ্গীদের নিয়ে ইঞ্জিল বোট নিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারী নৌকার কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতেন। সেই সুবাদে রোববার রাতেও পাভেলের বাড়িতে গিয়ে ৮-১০জন লোক তাকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে পিয়াইন নদীতে চাঁদা আদায় করতে যান। কিন্তু তার সাথে থাকা সবাই ফিরলেও পাভেল মিয়ার পানিতে ডুবে নিখোঁজ হয়েছেন বলে তাঁর আত্মীয়দের জানান।
পাভেল ‘মৃগী রোগী’ এবং পানিতে পড়ে সকাল ১০টায় নিখোঁজ হয়েছন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ গণমাধ্যমে প্রচার করেন বিভিন্ন সাংবাদিক। সেই সংবাদে রহস্যজনক কারণে পাভেল মিয়ার পিতার নাম মহরম আলীর পরিবর্তে ‘করম আলী’ লিখা হয়। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কথিক সাংবাদিকরা ফেসবুকে পাভেল মিয়াকে ‘মৃগী রোগী’ আখ্যা দিয়ে পানিতে ডুবে নিখোঁজ হয়েছেন বলে প্রচার করেন। তবে কারা পাভেলকে ঘর থেকে ঢেকে নিয়ে জাফলং পিয়াইন নদীতে চাঁদা আদায় করতে নিয়ে গিয়েছিলো সে ব্যাপারে কেউ মুখ খুলেননি।
পাভেল মিয়ার লাশ উদ্ধার হওয়ার আগেই ‘রহস্যজনক’ নিখোঁজের ঘটনাকে ধামচাপা দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে স্থানীয় একটি চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট। পাভেল মিয়ার পরিবারও স্বীকার করে তাকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে যায় কিছু লোক। এই নিয়ে গোইনঘাটঘাট জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়ে। তবে অবশেষে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) আনুমানিক দুপুর ১২টায় নিখোঁজ পাভেল মিয়ার লাশ পানিতে ভেসে উঠে।
এ ব্যাপার গোয়াইনঘাট থানার ওসি (তদন্ত) কবির আহমদ জানান, পাভেল মিয়ার লাশ কত ঘন্টা পর উদ্ধার হয়েছে তা আপনি হিসেব করে নিন। পাভেলের লাশ উদ্ধারের পর তার পরিবার বিনা ময়নাতদন্তে দাফনের জন্য সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট আবেদন করেছেন। এখন পাভেলের লাশের ময়নাতদন্ত হবে কি, হবে না তা সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে।