শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫
শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
সিলেট বিভাগ

সিলেটে কঠোর অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

মুসলিম উম্মাহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুই উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহা। এই দুই ঈদকে ঘিরে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের মাঝে তৈরি হয় নানা উৎসব মুখর পরিবেশ। একমাস সিয়াম সাধনার পর আসে পবিত্র ঈদুল ফিতর এবং ফিতরের আনন্দ ভাগাভাগি করার আড়াইমাস পরই আসে পবিত্র ঈদুল আজহা বা পশু কোরবানীর  উৎসব । তবে ঈদুল আজহায় সামর্থ্যবান ও কোরবানী দেয়া ওয়াজীব লোকদের পক্ষ থেকে আল্লাহর রাস্তায় করা হয় পশু কোরবানী। এই সময়টাকে ঘিরে পশুর হাটে চলে ভিন্ন ধরনের আমেজ। শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধরাও এই খুশিতে ভিড় জমান পশুর হাটে। পশু বেচাকেনায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন বেশিরভাগ মানুষ। সব মিলিয়ে নগরীর অলি-গলি, সড়ক-মহাসড়ক, গ্রাম থেকে শহর এবং ধনী-গরীব ও ক্রেতা থেকে বিক্রেতা সবার মাঝে তৈরি হয় উচ্ছ্বাস। ঈদকে কেন্দ্র করে ঘরমুখী মানুষের ঢল নামে বাস টার্মিনাল ও রেল স্টেশনে। আর এই সময়টাতে কিন্তু কিছু অসাধু ব্যক্তিদের কারণে সেই আনন্দ মাঝে মাঝে মাঠি হয়ে যায় অনেকের। চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, সড়কে ঝানজটসহ নানাবিধ দূর্ভোগের সম্মুখীন হতে হয় জনসাধারণের। নিরাপত্তাহীনতায় ভূগে অনেকের আনন্দ তখন ফিকে হয়ে যায়।

 


ঈদুল আজহাকে কেন্দ্রকরে সিলেট জেলা ও মহানগরীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে বলে জানা যায়। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজানি, নাশকতাসহ যেকোনো ধরনের অপরাধ রোধে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তাদের এই কঠোর অবস্থান। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ, জেলা পুলিশ, র‌্যাব-৯ এবং জেলা প্রশাসনের পারষ্পরিক সমন্বয়ে পরিচালিত হবে ভ্রাম্যমাণ আদালত। নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও সিলেটে থাকছে পুলিশী চেকপোস্ট, পিকেটিং পার্টি, মোবাইল পার্টি, সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন, ট্রাফিক পুলিশসহ ড্রোন ও রুফটপের মাধ্যমে তদারকি করা হবে। পাশাপাশি প্রত্যেকটি ঈদের জামাতের স্থানে নেওয়া হবে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা। স্থাপন করা হচ্ছে সিসি ক্যামেরা। এছাড়া ঈদের দিন শাহী ঈদগাহ এলাকায় থাকবে চার স্তরের নিরাপত্তা। দুই প্রবেশপথে তল্লাশির পাশাপাশি আশপাশ এলাকার সড়কেও থাকবে একাধিক চেকপোস্ট। নিয়মিত টহলের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও থাকবেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

 

 


এদিকে পবিত্র ঈদুল আজহায় ঘরমুখী যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের কথা মাথায় রেখে র‌্যাব-৯ এর উদ্যোগে সিলেট ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে চালু করা হয়েছে সাপোর্ট সেন্টার। যেখানে ঘরমুখী যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা, পশুর হাটে অনাকাঙ্খিত ঘটনা প্রতিরোধ, বাস টার্মিনাল, রেলওয় স্টেশনে যাত্রীদের দুর্ভোগ নিরসনে তারা কাজ শুরু করেছে। এসব সেন্টারে হঠাৎ অসুস্থ হয়েপড়া যাত্রীদের প্রাথমিক মেডিকেল সহায়তা দেয়া হবে। পাশাপাশি হঠাৎ যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিকল হওয়া যানবাহন তাৎক্ষনিক মেরামতের জন্য দক্ষ মেকানিক দিয়ে মেরামতের ব্যবস্থা, সার্বক্ষনিক সিসিটিভি দ্বারা মনিটরিং করা ও নিয়মিত অভিযোগ গ্রহণের মাধ্যমে আইনী সহায়ত প্রদান করা হচ্ছে।

 


ঈদ উপলক্ষ্যে যেকোনো ধরনের সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে র‌্যাবের সাইবার মনিটরিং সেল সার্বক্ষনিক তদারকিতে সক্রিয় রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা সুরক্ষায় প্রস্তুত রয়েছে র‌্যাবের কুইক রেসপন্স টিম। সাদা পোশাকে র‌্যাবের গোয়েন্দারাও বিভিন্ন পশুর হাট, বাস টার্মিনাল ও রেলওয়ে স্টেশন এবং লঞ্চ টার্মনালে সক্রিয় রয়েছেন। এসব কার্যক্রম ঈদ পরবর্তী ৭দিন চলমান থাকবে বলেও জানিয়েছে র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখা।

 


শাহী ঈদগাহ এলাকায় সাত স্তরের নিরাপত্তার কথা উল্লেখ করে সিলেট মহানগর পুলিশের সিলেট অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও সিলেটে থাকছে পুলিশী চেকপোস্ট, পিকেটিং পার্টি, মোবাইল পার্টি, সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন, ট্রাফিক পুলিশসহ ড্রোন ও রুফটপের মাধ্যমে তদারকি করা হবে। পাশাপাশি প্রত্যেকটি ঈদের জামাতের স্থানে নেওয়া হবে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা। স্থাপন করা হচ্ছে সিসি ক্যামেরা। এছাড়া ঈদের দিন শাহী ঈদগাহ এলাকায় থাকবে চার স্তরের নিরাপত্তা। দুই প্রবেশপথে তল্লাশির পাশাপাশি আশপাশ এলাকার সড়কেও থাকবে একাধিক চেকপোস্ট। নিয়মিত টহলের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও থাকবেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।


 


সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. রেজাউল করিম (পিপিএম সেবা ) বলেন, আসন্ন ঈদ-উল- আজহায় সড়ক সেতু ও রেল পথে যাত্রী সাধারণ যেন নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন যাতায়াত করতে পারে এবং মার্কেট ও পশুর হাটে নিরপত্তা প্রদান করার লক্ষ্যে এসএমপির সদস্যরা কাজ করছে। পাশাপাশি ঈদের ছুটিতে যাওয়া পরিবারের সদস্যরা নিজেদের বাসাবাড়ীর প্রতি খেয়াল রাখা । কেননা খালি বাসায় চুরের উপদ্রব হয় বেশি। তাই সবাইকে সচেতন থাকার পরামর্শ দেন। পাশাপাশি জনসাধারণের দূর্ভোগ লাঘবে এবং যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সড়কের উপর হাট-বাজার না বসানো ও কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করার আহবান জানান।

 


র‌্যাব -৯ এর অধিনায়ক লে.কর্ণেল মনজুর করিম বলেন, ছিনতাইকারী ধরার ব্যাপারে আমরা অনেক কাজ করেছি। যার ফলস্বরুপ বিগত ঈদুল ফিতরের সময় একসাথে অনেক ছিনতাইকারী ধরতে সক্ষম হয়েছি। এবারও তার ধারাবাহিকতায় আমাদের বিশেষ টহল এবং অপারেশন্স অব্যহত রয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে হবিগঞ্জ , ব্রাহ্মণ বাড়ীয়া এবং সিলেটের কদমতলী বাস টার্মিনালের কাছে তিনটি সাপোর্ট সেন্টার আমরা চালু রেখেছি যাতে করে মানুষ সহজে সেবা লাভ করতে পারে। পাশাপাশি আমাদের মিডিয়া সেন্টারে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে আমরা সকলা সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছি। একহাটের গরু যাতে অন্যহাটের লোকজন  জোরপূর্বক নিয়ে যেতে না পারে সেদিকেও আমাদের দৃষ্টি রয়েছে। সারাদেশের ন্যায় র‌্যাব-৯ সিলেটের কার্যক্রম সক্রিয় রেখেছে।

 


জেলা পুলিশের মিডিয়া অফিসার এএসপি সম্রাট তালুকদার বলেন, সড়কের নিরাপত্তা এবং পশুরহাট গুলোকে কেন্দ্রকরে থানাভিত্তিক এবং সেন্ট্রালি আমাদের নিরাপত্তা পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে। সবাই যেন হাটে নির্বিঘ্নে ক্রয় বিক্রয় করতে পারে সেই দিকে জোর দেয়া হয়েছে। মোটকথা সকল প্রকার নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

 

 

 

এই সম্পর্কিত আরো