মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের বছরের পবিত্র দিন ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। নানা জল্পনা-কল্পনার পর বছরে দুইবার এই উৎসব পালন করেন মুলমান ধর্মাবলম্বীরা। সিলেটে প্রতিবারের মতো এবছরও ২ হাজার ৯৪১টি স্থানে পবিত্র ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
সূত্র জানায়, সিলেট মহানগরীর ৩৯০টি স্থানে পবিত্র ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে খোলা স্থানে ও ঈদগাহে হবে ১৪২টি এবং নগরীর বিভিন্ন মসজিদে ঈদুল আজহার ২৪৮টি জামাত হবে। অন্যদিকে সিলেট জেলায় এবার ঈদুল আজহার জামাত ২ হাজার ৫৫১টি স্থানে পবিত্র ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হবে। তারমধ্যে ২ হাজার ২৭৪টি মসজিদে ও ২৭৭টি ঈদগাহে পালিত হবে এই জামাত। সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় ২৯৫টি, ওসমানীনগর উপজেলায় ২২৭টি, বালাগঞ্জ উপজেলায় ১৫২টি, গোলাপগঞ্জে ৩১৬টি, ফেঞ্চুগঞ্জে ১৩৮টি, বিয়ানীবাজারে ২১৮টি, জকিগঞ্জে ৩৮৫টি, কানাইঘাটে ২৬৯টি, জৈন্তাপুরে ১৩৭টি, গোয়াইনঘাটে ২৫০টি এবং কোম্পানীগঞ্জে মোট ১৬৪টি স্থানে ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।
জেলা ও মহানগর পুলিশ সূত্র জানায়, এবছর পবিত্র ঈদুল আজহায় সিলেট নগরীতে মোট ৩৯০টি স্থানে পবিত্র ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে ১৪২টি ঈদগাহ ও খোলা স্থান এবং ২৪৮টি মসজিদে হবে এই ঈদের জামাত। আর সিলেট জেলায় ২ হাজার ৫৫১টি স্থানে পবিত্র ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে ২ হাজার ২৭৪টি মসজিদে ও ২৭৭টি ঈদগাহে হবে পবিত্র ঈদুল আজহার জামাত।
সিলেটের ঐতিহ্যবাহী শাহী ঈদগাহ ময়দানে কোরবানী ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়। বুধবার বিকালে শাহী ঈদগাহ কমিটির সেক্রেটারি মো. কামাল মিয়া কামরান এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, জামাতের আগে কোরবানীর ঈদের তাৎপর্য বিষয়ক বয়ান পেশ করবেন বন্দরবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মুশতাক আহমদ খান এবং নামাজে ইমামতি করবেন একই মসজিদের ইমাম মাওলানা মুফতি জুনায়েদ আহমদ।
হজরত শাহজালাল (রহ.) দরগাহ জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টায় ও সকাল ৫টা ৪৫ মিনিটে বন্দর বাজার কালেক্টরেট মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
অন্যদিকে সিলেট নগরীর বন্দরবাজার এলাকার কুদরত উল্লাহ জামে মসজিদে ঈদের তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত সকাল ৭টায়, দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায় ও তৃতীয় জামাত সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। বিকালে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান কুদরত উল্লাহ মসজিদ কমপ্লেক্সের সেক্রেটারি মুকতাবিস উন নূর।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘প্রথম জামাতে ইমামতি করবেন মসজিদের ইমাম ও খতিব শায়খ সাঈদ বিন নুরুজ্জামান আল মাদানী, দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করবেন মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফিজ মাওলানা মিফতাহ উদ্দিন আহমদ এবং তৃতীয় জামাতে ইমামতি করবেন হাফিজ মাওলানা হোসাইন আহমদ।
এছাড়াও সিলেটের সরকারি আলীয়া মাদরাসা মাঠে আনজুমানে খেদমতে কুরআন সিলেটের উদ্যোগে সকাল সাড়ে ৭টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এখানে জামাতে ইমামতি করবেন অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সালাম আল মাদানী। জামাতে মহিলা ও শিশুদের জন্য আলাদা প্যান্ডেলের ব্যবস্থা থাকবে।
এছাড়াও পাঠানটুলা নবাবী ঈদগাহ ময়দানে পবিত্র ঈদুল আজহার জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে পবিত্র ঈদুল আজহায় ঘরমুখী যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের কথা মাথায় রেখে র্যাব-৯ এর উদ্যোগে সিলেট ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে চালু করা হয়েছে সাপোর্ট সেন্টার। যেখানে ঘরমুখী যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা, পশুর হাটে অনাকাঙ্খিত ঘটনা প্রতিরোধ, বাস টার্মিনাল, রেলওয় স্টেশনে যাত্রীদের দুর্ভোগ নিরসনে তারা কাজ শুরু করেছে।
এসব সেন্টারে হঠাৎ অসুস্থ হয়েপড়া যাত্রীদের প্রাথমিক মেডিকেল সহায়তা দেয়া হবে। পাশাপাশি হঠাৎ যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিকল হওয়া যানবাহন তাৎক্ষনিক মেরামতের জন্য দক্ষ মেকানিক দিয়ে মেরামতের ব্যবস্থা, সার্বক্ষনিক সিসিটিভি দ্বারা মনিটরিং করা ও নিয়মিত অভিযোগ গ্রহণের মাধ্যমে আইনী সহায়ত প্রদান করা হচ্ছে।
ঈদ উপলক্ষ্যে যেকোনো ধরনের সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে র্যাবের সাইবার মনিটরিং সেল সার্বক্ষনিক তদারকিতে সক্রিয় রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা সুরক্ষায় প্রস্তুত রয়েছে র্যাবের কুইক রেসপন্স টিম। সাদা পোশাকে র্যাবের গোয়েন্দারাও বিভিন্ন পশুর হাট, বাস টার্মিনাল ও রেলওয়ে স্টেশন এবং লঞ্চ টার্মনালে সক্রিয় রয়েছেন। এসব কার্যক্রম ঈদ পরবর্তী ৭দিন চলমান থাকবে বলেও জানিয়েছে র্যাবের গণমাধ্যম শাখা।
শাহী ঈদগাহ এলাকায় সাত স্তরের নিরাপত্তার কথা উল্লেখ করে সিলেট মহানগর পুলিশের সিলেট অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও সিলেটে থাকছে পুলিশী চেকপোস্ট, পিকেটিং পার্টি, মোবাইল পার্টি, সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন, ট্রাফিক পুলিশসহ ড্রোন ও রুফটপের মাধ্যমে তদারকি করা হবে। পাশাপাশি প্রত্যেকটি ঈদের জামাতের স্থানে নেওয়া হবে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা। স্থাপন করা হচ্ছে সিসি ক্যামেরা। এছাড়া ঈদের দিন শাহী ঈদগাহ এলাকায় থাকবে চার স্তরের নিরাপত্তা। দুই প্রবেশপথে তল্লাশির পাশাপাশি আশপাশ এলাকার সড়কেও থাকবে একাধিক চেকপোস্ট। নিয়মিত টহলের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও থাকবেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।