সুনামগঞ্জে প্রেমিকার বিয়ের খবর পেয়ে তাকে ছুরিকাঘাত করার অভিযোগ উঠেছে সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। হামলার পর ওই যুবক নিজের শরীরে ছুরিকাঘাত করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। পরে তাকে আটক করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জ পৌর শহরের হাসননগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থ (২৮) সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের নৌকাখালি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি সিলেট শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি।
গত ৫ অগাস্টের পর একাধিক মামলায় সঞ্জীবন পলাতক ছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। ছুরিকাঘাতে আহত ওই তরুণী (২৬) একই উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা।
সঞ্জীবন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং মেয়েটি জেলার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পুলিশ ও আহত তরুণীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই তরুণী সুনামগঞ্জ পৌর শহরের হাসননগর এলাকা দিয়ে ভাবি ও ছোট বোনকে নিয়ে পার্লারে যাচ্ছিলেন। এ সময় সঞ্জীবন মেয়েটিকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। পরে বোন, ভাবি এবং স্থানীয় লোকজন মেয়েটিকে তাৎক্ষণিক হাসপাতালে নিয়ে যান। ঘটনার পর সঞ্জীবন সেখান থেকে পালিয়ে শহরের ধোপাখালি শ্মশানে গিয়ে নিজের শরীরেও ছুরিকাঘাত করেন।
এ সময় স্থানীয় এলাকাবাসী সঞ্জীবনকে ধরে পুলিশে দেন। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে পুলিশের পাহাড়ায় তার চিকিৎসা চলছে।
মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও নৌকাখালি গ্রামের বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, “মেয়েটি সিলেট শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সঞ্জীবনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্প্রতি তাদের প্রেম ভেঙে যায়।
“গত ৫ অগাস্টের পর একাধিক মামলায় সঞ্জীবন আসামি হয়ে পলাতক ছিলেন। পরে মেয়েটির বিয়ের খবর পেয়ে তাকে আক্রমণ করেছে এবং নিজেকেও ছুরিকাঘাত করেছে। রবিবার মেয়েটির বিয়ের পিঁড়িতে বসার কথা ছিল।”
মেয়েটির এক চাচাতো ভাই বলেন, তার বোনের শরীরে ধারালো অস্ত্রের অন্তত ১০টি আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। যার নয়টিই গভীর ক্ষত। তাৎক্ষণিক অস্ত্রোপচার করা হলেও বোনের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক।
মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কিছুদিন ধরে সঞ্জীবন মেয়েটিকে বিয়ের জন্য চাপ এবং বিভিন্ন হুমকিও দিচ্ছিলো। বিষয়টি সঞ্জীবনের পরিবারকে জানানো হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি। এ কারণে এই ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটেছে।
সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার কর্মকর্তা (তদন্ত) মনিবুর রহমান বলেন, “সঞ্জীবনকে আটক করে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এখন সে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।”