বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
সিলেট বিভাগ

ঘুষ কেলেঙ্কারি

ছাতকের পিআইওকে ভোলার দৌলতখান উপজেলায় বদলি

ছাতক প্রতিনিধি

সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার দূর্নীতিবাজ প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) কেএম মাহবুব রহমানকে ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগে অবশেষে বদলি করা হয়েছে।

২৬ মে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের উপ-পরিচালক প্রশাসন-১ এর উপ-সচিব তাসনুভা নাশতারান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে তাকে ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলায় বদলি করা হয়েছে। ২ জুনের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদান না করলে ওইদিন থেকে তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ বলে গণ্য হবে মর্মে বদলি আদেশে উল্লেখ করা হয়।

জানা যায়, ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ছাতকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) হিসেবে যোগদান করেন পটুয়াখালী জেলার কেএম মাহবুব রহমান। এখানে যোগদানের পর থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে গড়ে তুলেন একটি সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সম্প্রতি কাজ না করে অসংখ্য প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের বিস্তর অভিযোগ উঠেছে ওই পিআইওর বিরুদ্ধে। বছরের পর বছর এখানে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় প্রকল্পের ঘুষের টাকায় নিরবে করেছেন সম্পদের পাহাড়। জনপ্রতিনিধিদেরও দিয়েছেন অর্থের ভাগ। তার অনিয়ম-দূর্নীতির বিরুদ্ধে স্থানীয় ও জাতীয় একাধিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলেও রহস্যজনক কারণে তিনি বহাল তবিয়তে থেকে যান। তার বিরুদ্ধে নেওয়া হয়নি বিভাগীয় কোন ব্যবস্থা। যে কারণে তিনি অনিয়ম-দূর্নীতিতে ছিলেন বেপরোয়া। গত বছরের ৫ আগস্টের পর কৌশলে এখান থেকে বদলির চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। 

২০২৪-২৫ অর্থ বছরের টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও এডিপির ২২৭টি প্রক‌ল্পের লাখে ১২হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠে ওই পিআইও'র বিরুদ্ধে। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে সব চেয়ে বেশি প্রকল্পের টাকা আত্মসাত করেছেন ওই পিআইও। ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৪ মে পর্যন্ত তিনি ট্রেনিং গেলে তার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন দোয়ারাবাজারের পিআইও লুৎফুর রহমান। তিনিও বিভিন্ন প্রকল্প কমিটির কাছ থেকে সরকারি খরচের নামে ঘুষ বানিজ্য করেছেন। এ ঘুষের টাকা ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ছাতক ও দোয়ারার এ দুই পিআও'র মধ্যে দ্বন্ধের সৃষ্টি হয়। ১৬ মে সন্ধ্যায় ছাতকের পিআইওকে ব্যক্তিগত ভাবে বাসায় ডাকেন ইউএনও। প্রকল্পের কোন ধরণের ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ ছাড় দেওয়া হবেনা বলে পিআইওকে সাফ জানিয়ে দিলে ১৭ মে থেকে  অফিস করেননি পিআইও। ওইদিন রাতে ইউএনও বরাবরে তিন দিনের ছুটি চেয়ে একটি আবেদন লিখে ইউএনওকে না দিয়ে নিজ কার্যালয়ের টেবিলে রেখে কৌশলে ছাতক ত্যাগ করেন দূর্নীতিবাজ পিআইও কে এম মাহবুব রহমান। পালিয়ে থাকা অবস্থায় ১০দিন পর ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগে ২৬ মে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় থেকে বদলি করা হয়। 

এদিকে, দুই পিআইও'র ঘুষ-দুর্নীতি প্রকাশের ভয়ে কার্য সহকারি নাজমুল ইসলামকে ছাতক থেকে রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলায় বদলি করা হয়েছে। নিজের কু-কর্ম ঢাকতে ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন বদলিকৃত পিআইও কেএম মাহবুব রহমান। সুনামগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা হাসিবুল হাসান ডিও পিআইও কেএম মাহবুব রহমানের বদলি আদেশের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ছাতকে একজন পিআইও পাঠানো হবে।

এই সম্পর্কিত আরো