দীর্ঘদিন ধরেই সুনামগঞ্জের বিশম্ভরপুর উপজেলার ইউএনও মফিজুর রহমানের প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলন করছিলেন উপজেলার ছাত্রজনতা। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে স্হানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের যোগসাজশে সীমান্তের চোরাচালানসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে।
এছাড়াও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজে অনিয়ম, পর্যটন স্পটের সংস্কার ও সুন্দর্য বৃদ্ধি না করা। এসব অনিয়মের বিষয়ে বিশম্ভরপুরের স্থানীয় সাধারণ ছাত্রজনতা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন।আন্দোলন বানচাল করতে নানা কৌশল করেন ইউএনও। সর্বশেষ ছাত্র জনতার ডাকে বিশম্ভরপুর ও কারেন্টের বাজারে মানববন্ধনে স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের একাংশের নেতাকর্মীদের দিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করান। এতে আন্দোলন আরও জোরদার হয়ে ওঠে।
পরবর্তীতে ইউএনও এর কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে এলাকার হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রেজাউল করিম গিয়ে আন্দোলনকারীদের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়। এরপর দশ কর্মদিবসের মধ্যে ইউএনও এর প্রত্যাহারের জন্য জেলা প্রশাসক মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করবেন বলে আশ্বস্ত করেন।
তারই ধারাবাহিকতায় বিশম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মফিজুর রহমানকে রংপুর বিভাগে বদলি করা হয়েছে। গত ২৪ মে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাঠ প্রশাসন-২ শাখার উপসচিব আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের কর্মকর্তা মফিজুর রহমানকে রংপুর বিভাগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে পদায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনারের অধীনে ন্যস্ত করা হয়েছে। এছাড়াও তাঁর নিজ অধিক্ষেত্রে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য The Code of Criminal Procedure, 1898 এর section- 144 এর ক্ষমতা অর্পণ করা হলো।
জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।