সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার উচু জমির পলি মাটিতে চাষীদের আর্শিবাদ হয়ে উঠেছে মিষ্টি আলু। কম খরচে সেচ, সার ও কীটনাশক প্রয়োগ এবং সল্প সময়ে বেশী ফলনে আনন্দিত চাষীরা।
বিগত বছরে কিছুটা হতাশ হলেও এবছর হতাশা কাটিয়ে নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে মিষ্টি আলুর চাষাবাদে ঝুকছেন কৃষকেরা। নদীর জেগে উটা বালুচর কৃষকের স্বপ্ন পুরন করে চলেছে। ধান ভ‚ট্টা, মরিচ, গোল আলু মিষ্টি আলূসহ রবি ফসল উৎপাদন বেড়েছে অধিক হারে। তাই শুকনো মৌসুমে অন্য ফসলের মধ্যে মিষ্টি আলু চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন এলাকার কৃষক সহ বর্গাচাষীরা।
এলাকার বিভিন্ন কৃষক জানান প্রতি বছর পাহাড়ী ঢলে পলি এসে জমির উর্বরতা বেড়েছে। কৃষকেরা তাদের ইচ্ছে মতো সব ধরনের ফসল উৎপাদন করতে পারছেন। চর কোন কৃষক স্বপ্ন পুরনে বাধা হয়না।
মিষ্টি আলু চায়ী লক্ষীপুর গ্রামের জুয়েল মিয়া বলেন, নদীর চর আমাদের এখন সোনার স্বপ্ন। এই চরে আমরা যেকোন ফসলের বীজ বপন করি সেই ফসলই বালির নিচ থেকে হাসি মুখে বেড়ে উঠে। এক সময় এই সমস্ত চরে কোন আবাদ হতোনা। এখন যে বীজ বপন করি সেটিই হয়ে যায় আমাদের সোনার স্বপ্ন। আগে এলাকার জমি জমা বিক্রি হতো সস্তা দরে। এখন আর কেও চরের জমি বিক্রি করেনা। কারন বালুচর এখন কৃষকের আশার আলো।
মান্নান ঘাটের শাহেদ আলী শরীফপুর গ্রামের আমজাদ হোসেন বলেন শরীফপুর মন্নানঘাটের চরের জমিতে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ করে ২ বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের মিষ্টি আলু চাষ করেছি। আলুর বীজ কৃষি অফিসের মাধ্যমে এনে জমিতে রোপন করি। আনেকটা গোল আলুর মতো আইল করে রোপন করেছি। ৬৫ দিন পর প্রতিটি গাছে ১০ থেকে ১২টি আলু হয়েছে। প্রতিটি গাছে ২ থেকে ৩ কেজি আলু হবে। বর্তমানে মিষ্টি আলুর বাজার ১ হাজার থেকে ১২শত টাকা মন বিক্রয় করেছি। প্রতি বিঘা জমিতে দেড় লাখ টাকা বিক্রয় হবে। ২ বিঘায় আশা করছি ৩ লাখ টাকা বিক্রয় হবে।
বিভিন্ন এলাকায় মিষ্টি আলু চাষীরা জানান মিষ্টি আলু যুগ যুগ ধরেই এলাকায় চলে এসেছে। এই এলাকায় মিষ্টি আলু এলাকায় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকাররা এসে নিয়ে যান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুমন কুমার সাহা জানান, কন্দাল ফসল উন্নয়নের আওতায় কয়েক জাতের মিষ্টি আলু উপজেলায় ৭৫ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ১৯ মেট্রিক টন করে ১৪ শত ২৫ মেট্রিক টন মিষ্টি আলু এবার উৎপাদন হবে। চাষীরা উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে চাষাবাদ করেছেন। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ভালো ফলন হয়েছে দামেও খুশী কৃষক।